দুই মার্কিন নারী এমপি কোরআন হাতে শপথ নিলেন

ডেস্ক রিপোর্ট – মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত দুই মুসলিম নারী কোরআনে কারিমে হাত রেখে শপথ নিয়েছেন। তন্মধ্যে একজনের মাথায় ছিলো হিজাব ও হাতে তাসবিহ। হিজাব মাথায় প্রথমবারের মতো শপথ নেওয়ার ঘটনা ঘটলেও কোরআন হাত রেখে শপথ নেওয়ার ঘটনা এবার প্রথম নয়।

২০০৭ সালে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী কেইথ এলিসন কোরআন হাতে শপথ নিয়েছিলেন। কোরআন হাতে তাদের শপথ নেওয়ার বিষয়টি পশ্চিমা গণমাধ্যম ব্যাপকভাবে প্রচার করেছে। যদিও কিছু ডানপন্থি রাজনীতিক বিষয়টির সমালোচনা করেছেন।

মুসলিমভীতি কাটিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ১১৬তম কংগ্রেসে এসে প্রথমবারের মতো মুসলিম সম্প্রদায় থেকে দু’জন নারী নির্বাচিত হন। তারা হলেন, ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত রাশিদা তালিব ও সোমালি বংশোদ্ভূত ইলহান ওমর।

পূর্ব ঘোষণা মতে শপথ অনুষ্ঠানে রাশিদা তালিব ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করে আসেন।

কোরআনে হাত রেখে শপথ নেওয়ার কারণ হিসেবে ৪২ বছর বয়সী রাশিদা তালিব বলেন, অনেক আমেরিকান মনে করে ইসলাম যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের বাইরের কিছু। কিন্তু বাস্তবে তা নয়।

মিশিগানের ডেট্রয়েটের বাসিন্দা রাশিদা তালিবের পরিবার ইসরাইল অধিকৃত ফিলিস্তিনের ছোট একটি গ্রাম থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিল।

অন্যদিকে ৩৭ বছর বয়সী ওমর ইলহান কংগ্রেসের প্রথম সদস্য হিসেবে হিজাব মাথায় শপথ নিয়েছেন। এ পর্যন্ত এ হাউজে কোনো ধরনের হ্যাট বা হিজাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল ছিল। ওমর ইলহান তার দাদার একটি কোরআনের ওপর হাত রেখে শপথ নেন। এই দাদা তাকে আজকের অবস্থানে পৌঁছাতে সাহায্য করেছেন। শপথ নেওয়ার সময় ইলহানের হাতে তাসবিহ ছিল।

ওমরের বাবা নুর মোহাম্মদ মেয়ের ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, সোমালিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসার ২৩ বছর পর ইলহান ওমর কংগ্রেসে প্রবেশ করেছে।

২০০৭ সালে কংগ্রেসম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর পবিত্র কোরআন হাতে নিয়ে শপথগ্রহণ করেছিলেন এলিসন। তার পুরো নাম কেইথ মাউরিস এলিসন। ১৯৬৩ সালের ৪ আগস্ট মিশিগানের ডেট্রয়েটে এক ক্যাথলিক খ্রিস্টান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯ বছর বয়সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এলিসন একজন সুন্নি মুসলিম এবং মার্কিন রাজনীতিতে উদারপন্থি হিসেবে পরিচিত।

এলিসন ২০০৭ সালে কংগ্রেসম্যান নির্বাচিত হয়ে যেমন ইতিহাস রচনা করেছিলেন, তেমনি ২০১৭ সালে ডেমোক্র্যাট দলের উপ-প্রধান নির্বাচিত আরেক ইতিহাস সৃষ্টি করেন। শ্রমিক ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়তার দরুণ তিনি এ পদে নির্বাচিত হন। তার বিজয়ের মধ্য দিয়ে আমেরিকার বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ডোমোক্রেটিক পার্টির শীর্ষ পদে প্রথমবারের মতো কোনো মুসলিম আসীন হন।