উখিয়ায় এবার ইয়াবার চালান লুট: নেপথ্যে কারা?

বিশেষ প্রতিবেদক •

কক্সবাজারের উখিয়ায় এবার ইয়াবা লুট করে ভাগভাটোয়ারা করেছে একটি সিন্ডিকেট। এনিয়ে এলাকার বেশ মুখরোচক আলোচনা সমালোচনা হলেও বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে ইয়াবা পাচারকারী ও লুটকারীরা।

গত ৩ এপ্রিল রাতে উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের শফির বিল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার সাথে জড়িতরা ভাগভাটোয়ারা অংশ নিয়ে বিপুল টাকা আয় করেছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত রোববার রাতে দুপক্ষের মধ্যে ঝগড়ার ঘটনা ঘটে এবং একটি পলিথিনের ব্যাগ নিয়ে দুই যুবক পালিয়ে যায়। পরে জানা যায় জালিয়াপালংয়ের ঈমামের ডেইল এলাকার ছৈয়দ আলমের পুত্র মোঃ হারুণের কাছ থেকে ইয়াবার একটি চালান নেওয়ার কথা হয় শফির বিল এলাকার মোঃ আব্দুল করিমের ছেলে সোহেল ও মাহমুদুল হকের ছেলে আবুল কাসেমের। তারা ইয়াবার কেনার কথা বলে বেলালকে নিয়ে আসে শফির বিলে। পরে হারুণ ইয়াবার চালান নিয়ে আসলে সোহেল ও কাশেম সুযোগ বুঝে ইয়াবা পাচারকারী বেলালের উপর হামলা চালায় এবং তাকে মারধর করে ইয়াবার একটি পুটলা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে ফেলে। যেখানে দশ হাজার ইয়াবা ছিলো বলে সূত্রে জানা গেছে।

পরবর্তীতে ইয়াবা পাচারকারী হারুণ লুটের বিষয়টি গোপন রেখে মোবাইল ছিনতাই হয়েছে বলে স্থানীয়দের সহায়তায় ইউপি সদস্য সাহাব উদ্দিনের কাছে নালিশ দিলে তিনি এর একটি সমাধান দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য সাহাব উদ্দিন ইয়াবা লুটের বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে বলেন, সেদিন রাতে আমাকে স্থানীয়রা খবর দিলে আমি দ্রুত এসে হারুণের কাছে জানতে চাইলে সে এখানে বেড়াতে আসছে এবং তাকে একা পেয়ে সোহেল ও কাশেম হামলা চালিয়ে মোবাইল ছিনতাই করেছে বলে জানায়। পরে সোহেল ও কাশেমকে ডেকে বিষয়টি সমাধান করি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শফির বিল গ্রামটি পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় রাত বাড়ার সাথে সাথে চলে নানান অপকর্ম এবং দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা শিবির থেকে জুম্মাপাড়ার পাহাড়ি এলাকা দিয়ে বিভিন্ন সময় ইয়াবা আসে এ এলাকায়। ইয়াবা খালাসের নিরাপদ রুট হিসেবে ওই এলাকায় গড়ে উঠেছে একটি ইয়াবা সিন্ডিকেটও। যারা নিয়মিত ইয়াবা বিক্রি ও লুটের ঘটনায় জড়িত।

সর্বশেষ ৩ এপ্রিল (রোববার) ইয়াবা পাচারের খবরের বিষয়টি জানতে পেয়ে চক্রটি ইয়াবা ট্যাবলেটগুলো লুট করেন। অবৈধভাবে ইয়াবা পাচার ও লুটের ঘটনাটি এখন ‘সবার আলোচনায়’।

অভিযুক্ত কাশেম ও সোহেলের কাছে বিষয়টি ব্যাপারে জানতে চাইলে কাশেম দাম্ভিকতার সুরে ভুল নাম্বার বলে কল কেটে দেন এবং সোহেল ইয়াবা লুটের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ইয়াবা লুটের বিষয়ের সাথে আমি জড়িত নই৷ আমাকে পরিকল্পিত ভাবে ফাঁসানো হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, কাশেম এবং আলী ও এহেছান ইয়াবা লুটের জড়িত আছে৷

জানতে চাইলে ইনানী পুলিশ ফাড়ির উপপরিদর্শক অলিউর রহমান বলেন, এবিষয়ে আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। ইয়াবা পাচার বা লুট এমন ঘটনার সাথে যদি কেউ জড়িত থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে শফিরবিল এলাকার সচেতন মহল ইয়াবা কারবারি ও বিভিন্ন অপকর্মের হোতাদের চিহ্নিত এবং ইয়াবা পাচারের নিরাপদ রুট বন্ধ করার দাবী জানিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।