চকরিয়ায় ভোট গ্রহণ কাল: নির্বাচন ঘিরে প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তা

রাজু দাশ, চকরিয়া •


কক্সবাজারের চকরিয়ায় পৌরসভার নির্বাচন আজ।
অবাধ, সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য পরিবেশে ভোট সম্পন্ন করতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। শহরজুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

আজ সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডের ১৮টি ভোট কেন্দ্রের
প্রথমবারের মতো ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে ভোট গ্রহন করা হবে। সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ন পরিবেশে ভোট গ্রহনের লক্ষ্যে প্রশাসন ও নির্বাচন অফিসের পক্ষ থেকে পূর্বেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে ইভিএম মেশিন সহ নির্বাচনী সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাও গ্রহন করা হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরাও ভোটারদের সমর্থন পেতে ইতোমধ্যে তাদের প্রচার প্রচারনা সম্পন্ন করেছে। প্রার্থীদের প্রতীক সম্বলিত পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে পৌর শহরের অলি-গলি সহ ভোট কেন্দ্রগুলোর চারপাশ। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের গুণাগুন বিচার বিশ্লেষন করে ভোটাররাও মুখিয়ে আছে যোগ্যপাত্রে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য।

প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ১৮টি ভোট কেন্দ্রে নির্বাচন অনুষ্টিত হবে। এসব ভোট কেন্দ্রেগুলোর সবগুলো ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করে বিপুল সংখ্যক র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ১২জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ৪ প্লাটুন বিজিবি, র‌্যাবের ৬টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, পুলিশের দুটি মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। একইসাথে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ৩ জন পুলিশ, ৯ জন আনসার সদস্য (৩ জন নারী আনসারসহ) নিরবচ্ছিন্নভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। তবে অতিঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে নিরবচ্ছিন্নভাবে বাড়তি ফোর্স দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, আসন্ন এ নির্বাচনে মেয়র পদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র আলমগীর চৌধুরী, নাগরিক কমিটি মনোনীত স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াবুল হক (নারিকেল গাছ), জাতীয় পার্টি (এরশাদ) মনোনীত প্রার্থী মনোয়ার আলম (লাঙ্গল) তন্মধ্যে নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফয়সাল সিদ্দিকী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। সাধারণ কাউন্সিলর পদে বিভিন্ন ওয়ার্ডে দ্বিমুখী ও ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে তিন ওয়ার্ডে ১৪ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৯ ওয়ার্ডে ৪৯ জন। সব মিলিয়ে ৩ পদে মোট ৬৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।অনুষ্টিতব্য নির্বাচনে ৪৮ হাজার ৭’শ ২৪জন ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে ২৫ হাজার ৮’শ ৯৯ জন পুরুষ এবং ২২ হাজার ৮’শ ২৫জন মহিলা ভোটার ভোটাধীকার প্রয়োগ করবেন।

স্থানীয়রা জানান, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ ভোট হলে চকরিয়া পৌরসভায় মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে নৌকা- স্বতন্ত্র প্রার্থী নারিকেল গাছ প্রতীকের মাঝে। এখন নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে পৌরবাসী কাকে মেয়র হিসেবে বেছে নেবে, মেয়র পদে বিজয়ের শেষ হাসি কে হাসবে তা জানতে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। তবে কিছু কিছু এলাকায় নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতা ও সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় ভোটাররা।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, ৯টি ভোটকেন্দ্রের ১৩৯টি বুথে ইভিএম পদ্ধতিতে
সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভার নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ দৈনিক রূপসীগ্রামকে বলেন, প্রথমবারের মতো ইভিএম মেশিনে ভোট গ্রহণ হচ্ছে চকরিয়া পৌরসভার। পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ডে ১৮টি কেন্দ্র রয়েছে। ১৮টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। ভোট গ্রহণের দিন ১২ জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৪ প্লাটুন বিজিবি, র‌্যাবের ৬টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, পুলিশের দুটি মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স ও অতিরিক্ত পুলিশ মাঠে রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ভোট কেন্দ্র গুলোর সকল বুথের সকল কার্য্য সম্পন্ন করা হয়েছে। একই সাথে নির্বাচন সফল ও শান্তিপূর্ণ ভাবে শেষ করার লক্ষ্যে বিচ্ছিন্ন সহিংসতা এড়াতে গতরাত থেকে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির টোহল জোরদার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, করোনা মহামারির কারণে দুই দফা স্থগিত হয় চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচন। চলতি বছরের ১১ এপ্রিল প্রথম পৌরসভা নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করেন নির্বাচন কমিশন। তবে করোনা মহামারির কারণে প্রথম দফার নির্বাচন স্থগিত করে ২১জুন দ্বিতীয় দফায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করা হয়। পরে করোনা মহামারির কারণে সেটিও স্থগিত হয়ে যায়। সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করা হয়।###