চরম হতাশায় কক্সবাজারের লবণ চাষীরা

ডেস্ক রিপোর্ট ◑  চরম হতাশায় দিনাতিপাত করছেন লবণ চাষীরা। লবণের মূল্য বৃদ্ধি পাবে এমন আশায় উৎপাদিত লবণ বিক্রি না করায় আর্থিক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে চাষীদের। এত প্রতিশ্রুতির একটিও বাস্তবায়ন না দেখায় চাষীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।

বিসিক মাঠ পর্যায়ে ১ লাখ মেট্রিক টন লবণ আমাদিনর প্রক্রিয়া শুরু করলেও তা অদ্যবদি শুরু না হওয়ায় লবণের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছেন না এমন অভিযোগ চাষীদের।

চরম হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন লবণ চাষীরা। লবণ মাঠে এখন অবিক্রিত লবণের স্তুপ পড়েছে। বেসরকারি খাতে কয়েকটি কোম্পানি লবণ আমদানির ঘোষণা দিলেও মাঠ পর্যায়ে বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়েনি এ ঘোষণার।

সম্প্রতি লবণ চাষী সমাবেশ করে শিল্পমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির প্রভাব পড়েনি চাষীদের মাঝে। যার ফলে হতাশায় দিন কাটানো ছাড়া আর কোন উপায় দেখছেন না তারা।

লবণ চাষী ও ব্যবসায়ি কালারমারছড়ার মনজুর আলম বাদশা জানিয়েছেন, লবণের দাম বাড়বে এমন আশা অনেকটা ছেড়ে দিয়েছে চাষীরা। লবণ মাঠে বিনিয়োগকৃত টাকা কোনভাবে তুলে নিতেই তৎপরতায় রয়েছে সবাই। বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে ১৯০/২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ লবণ, যা জমির এক মৌসুমের লাগিয়ত ও উৎপাদন  খরচের অর্ধেকের চেয়ে কিছু বেশী। অধিকাংশ লবণ চাষী উৎপাদিত লবণ বিক্রি না করে রেখে দিলেও অনেকে আর্থিক সংকটে পড়ে লোকসান হলেও লবণ বিক্রি করে দিচ্ছেন।

চকরিয়া উপজেলার বদরখালীর নুরুল আমিন জানিয়েছেন, বেসরকারীখাতে লবণ ক্রয়ের ঘোষণাও আরেকটা ষড়যন্ত্র। সরকার সরাসরি লবণ ক্রয় না করলেও লবণের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার কোন সম্ভবনা নেই। বেসরকারী কোম্পানিগুলো লবণ ক্রয় করলে লবণের দাম আরো কমে যাবে। ইতোমধ্যে একটি কোম্পানি গোপনে লবণ ক্রয় করছে। ওই লবণ তারা মাঠ পর্যায় থেকে ক্রয় না করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই ক্রয় করছে। এতে মধ্যসত্ত্বভোগীর সংখ্যা আরো একজন বেড়ে গেছে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় একটি অসাধু ও অতি মুনাফালোভী লবণ সিন্ডিকেটের কারণে দেশের বাজার অস্থিতিশীল। এতে সঠিক দাম পায় না প্রান্তিক লবণচাষীরা। লবণ শিল্প বিরোধী চিহ্নিত চক্রকে দমন করতে না পারলে আগামী দিনে লবণ শিল্প খাত আরো কঠিন অবস্থার মুখোমুখি হবে।

তাদের অভিযোগ, প্রতিদিনই ফিনিশ লবণ দেশে ঢুকছে। যা কম দামে বাজারে ছড়িয়ে দিচ্ছে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। টেক্স ফ্রি সোডিয়াম সালফেট ছড়িয়ে দিচ্ছে বাজারে।

এদিকে বিসিক কর্তৃক ১ লাখ মেট্রিক টন লবণ আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হলেও অদ্যবদি তা শুরু হয়নি। মৌসুম প্রায় শেষ হওয়ার পথে।

বিসিক কক্সবাজারের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) সৈয়দ আহামদ জানান, মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ চাওয়া হয়েছে। অর্থ ছাড় পেলেই প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্যে লবণ কেনার প্রক্রিয়া শুরু করবে বিসিক। আর মাঠ থেকে লবণ কেনা শুরু হলে স্থিতিশীলতা আসবে।