প্রথম থেকে আমাদের সাথে ছিল ইকবাল ভাই

আরিফুল ইসলাম আরিফ ◑

কোভিড-১৯ একটি সংক্রামক রোগ। এই রোগ করোনাভাইরাস সংক্রমণ দিয়ে হয়। এটি ২০২০ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়। চীনের উহান প্রদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে অনুষ্ঠিত একটি সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন।

মার্চের ৮ তারিখে প্রথম করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হওয়ার পর মূলত গত তিন মাস ধরে করোনাভাইরাসের মহামারি ঠেকাতে লড়ছে বাংলাদেশ। ছোঁয়াচে এই রোগের বিস্তাররোধের জন্য চলেছে সাধারণ ছুটি। সবাইকে বলা হয়েছে ঘরে থাকতে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষীকির সূচনা দিন অর্থাৎ ১৭ মার্চ থেকে সর্বস্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি ঘোষিত হওয়ার পর, ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি শুরু হয় এবং ৩০ শে মে পর্যন্ত ছুটি বহাল ছিল।

করোনা সংকট শুরু হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন বিভাগের জেলা প্রশাসক, চিকিৎসক, পুলিশ, সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে ব্রিফিং ও নির্দেশনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন । তাই গত তিন মাস ধরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সকলে কাজ করে যাচ্ছেন। এ করোনাকালে করোনা আক্রান্তদের সহায়তায় বিভিন্ন এলাকার সাংসদেরা তাদের নিজস্ব এলাকার মানুষের সহায়তায় কাজ করে যাচ্ছেন। জনপ্রতিনিধিগণ জনগণের কল্যাণে তাদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন সেই করোনাকালের শুরু থেকে। এটা তাদের দায়িত্ববোধের বহিঃপ্রকাশ। এ ক্ষেত্রে আমাদের দিনাজপুর-৩ আসনের এমপি ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম তার সক্রিয় ভূমিকা শুরু থেকেই পালন করে চলেছেন।

তিনি শুরু থেকেই করোনাকালের বেশিরভাগ সময় দিনাজপুরে অতিবাহিত করছেন, জনগণের পাশে থাকছেন। তিনি সাধারণ ছুটি উপেক্ষা করে এলাকায় ছিলেন, মানবিকতার হাত বাড়িয়ে কাজ করে চলেছেন। তিনি এই দূর্যোগে সুখে-দুঃখে মানুষের পাশে আছেন,তাদের সহায়তা করছেন,তাদের মনোবল বাড়িয়ে চলেছেন।

তিনি সব সময় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩১ দফা নির্দেশনা অনুযায়ী দলীয় নেতাকর্মীদের কোথায় কী করতে হবে, কী ঘটছে-যাবতীয় বিষয়ে সার্বিক দিকনির্দেশনা দেন।

তিনি সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণের জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন; যার মধ্যে রয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা, সব সরকারি ও বেসরকারি অফিস, বাজার (খুব প্রয়োজনীয় বিষয় ছাড়া) ৪১ দিনের জন্য বন্ধ করে দেয়া এবং এমনকি পবিত্র রমজান মাসেও সব ধরনের সমাবেশ নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে প্রশাসনকে সহায়তা প্রদানের জন্য ২৪ ঘণ্টা কাজ করেছেন।

এ পরিস্থিতিতে যাতে কোনো মানুষই মৃত্যুবরণ না করে, আর যাতে মানুষ আক্রান্ত না হয়, সেই লক্ষ্য নিয়েই সবাইকে নিয়ে কাজ করে চলেছেন। এটি হচ্ছে অত্যন্ত সংক্রামক একটা ব্যাধি। তিনি প্রতিনিয়ত জেলা প্রশাসক, চিকিৎসক, পুলিশ, সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেছেন ও নির্দেশনা দিয়েছেন ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে পৃথক ভিডিও কনফারেন্সে রংপুর বিভাগের (৪ মে) জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। সেই কনফারেন্সে দিনাজপুর জেলার জনপ্রতিনিধি হিসাবে মাননীয় এমপি ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এবং অন্যান্য প্রতিনিধিরা উপস্হিত ছিলেন। মহামারির এই সময়ে তিনি কেবল পরামর্শ ও নির্দেশনা নয় বাস্তবায়নযোগ্য অনেককিছু করেছেন।

তিনিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী এই মহামারি পরিস্থিতিতে কৃষিখাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। এ কারণে তিনি কৃষি উৎপাদন বাড়াতে জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসন, কৃষি বিভাগের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন এবং পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়েছেন ।

তিনি সমাজের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী যেমন: কৃষিশ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা/ভ্যানচালক, পরিবহন শ্রমিক, ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী, পথশিশু, স্বামী পরিত্যক্তা/বিধবা নারী এবং হিজড়া স¤প্রদায়ের প্রতি বিশেষ নজর রাখাসহ ত্রাণ সহায়তা প্রদান নিশ্চিত করেছেন। ত্রাণ সামগ্রী তালিকা অনুযায়ী বিতরণ করা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায় ও দরিদ্রদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়ার জন্য তিনি ইউপি চেয়ারম্যানদেরকে বিতরণ করেন।

এছাড়া শুরু থেকে তার ব্যক্তিগত পদক্ষেপে ত্রাণ সামগ্রী স্থানীয় জনগণের মাঝে বিতরণ করে চলেছেন। তিনি সবসময় স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা ও সামাজিক দূরত্ব মেনে ত্রাণ বিতরণ করেন। তিনি একটি প্রতিবন্ধী পরিবারকে বেশ আগে সেলাই মেশিন ও হুইল চেয়ার উপহার দিয়েছিলেন। এই লকডাউনে সেই পরিবার বিপদে তাকে ফোন করলে তিনি বেঁচে থাকার জন্য যা যা দরকার তা এই পরিবারকে উপহার পাঠিয়েছেন।

কোভিড-১৯ বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে মারাত্মক হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা অসীম সাহসিকতার সাথে এ দূর্যোগ মোকাবিলা করছে। তাই এ পরিস্থিতিতে করোনাকালের শুরুতেই তিনি এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, দিনাজপুর ও দিনাজপুর সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করে তার করনীয় ঠিক করেছেন, আইসোলেশন কর্ণার খুলেছেন, আইসিইউ সুবিধা বাড়ানোর ব্যবস্থা করেছেন। দ্রæততম সময়ের মধ্যে মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে আরটি-পিসিআর ল্যাবের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন এবং সেখানে প্রতিদিন প্রায় ২০০ রোগীর করোনা সনাক্তকরণ পরীক্ষা করানো যায়।

এ এক সময় উপযোগী পদক্ষেপ যা দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় এবং নীলফামারী জেলার জনগণের জন্য একটা আর্শীবাদ হয়ে এসেছে। তিনি সবসময় হাসপাতাল পরিদর্শন করেন ও চিকিৎসাধীন রোগীদের খোঁজখবর রাখেন।

প্রাণঘাতী ভাইরাস প্রতিরোধে তাঁর বিভিন্ন পদক্ষেপে এখন করোনা পরীক্ষা, আইসোলেশনে এবং কোয়ারেন্টাইনে রাখার ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ হয়েছে। এই দূর্যোগ মোকাবিলায় একটি টেকনিক্যাল কমিটির অধীনে ডাব্লিউএইচওর নির্দেশিকা অনুসারে প্রতিনিয়ত করোনা পরিস্থিতি আপডেট করা হচ্ছে। অনলাইনে দিনাজপুর জেলার প্রতিদিনের করোনা আপডেট পাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।

তিনি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্যসুরক্ষার সরঞ্জামসমূহের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন যেমন-মাস্ক, হ্যান্ড সেনিটাইজার, গ্লাভস ইত্যাদি সরঞ্জামসমূহ। তিনি কর্তব্যরত চিকিৎসকদের জন্য পিপিই, কঘ৯৫ মাস্ক বিতরণ করেছেন। তার নির্দেশে জীবাণুনাশক স্প্রে দিয়ে হাসপাতাল ও শহরের বিভিন্ন জায়গা জীবাণু মুক্তকরণ করা হয়েছে। করোনা রোগীদের জন্য টেলিমেডিসিন সেবা চালুর ব্যবস্থা করেছেন। পুরো রমজান মাসে সকল ইন্টার্নদের জন্য ইফতার ও সেহরী তাদের রুমে পৌছে দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। আইসোলেশনে থাকা চিকিৎসকদের জন্য পর্যটন মোটেলে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। ঈদের আগে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের জন্য ঈদ উপহার হিসাবে মেয়েদের জন্য শাড়ী আর ছেলেদের জন্য পাঞ্জাবী পাঠিয়েছেন। তিনি এই দূর্যোগের সময়ে চিকিৎসকদের উৎসাহ দিয়ে তাদের সাহস জুগিয়েছেন ও অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। তিনি একজন চিকিৎসকবান্ধব জনপ্রতিনিধি।

এ করোনাকালে তিনি মানবিকতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন। জনগণের কাজ তিনি আন্তরিকতার সাথে পালন করে চলেছেন।তার প্রতিটি প্রদক্ষেপ সাধারণ মানুষের জন্য।নিঃস্বার্থভাবে আন্তরিকতার সাথে একনিষ্ঠভাবে কাজ করে চলেছেন তিনি আর এই কাজের বিনিময়ে তিনি সাধারণ মানুষের দোয়া ও আর্শিবাদ পেয়ে চলেছেন প্রতিনিয়ত।