বিট কর্মকর্তা সাজ্জাদ হত্যার নেপথ্যে কারা ছিলো?

ইমরান আল মাহমুদ:

বার বার অভিযানের ক্ষোভ থেকে বনবিট কর্মকর্তা সাজ্জাদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।হত্যাকাণ্ডের আগেরদিন গত ৩০ মার্চ রাজাপালং হরিণমারা এলাকার কামাল উদ্দিন ড্রাইভারের একটি ডাম্পারও জব্দ করে বিট কর্মকর্তা সাজ্জাদ।

সে ক্ষোভ থেকে কামাল সহ তার পাহাড়খেকো সিন্ডিকেটের পরোক্ষ নির্দেশে চালক বাপ্পি বিট কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান কে হত্যা করে বলে জানা যায়। পাহাড় ও মাটি খেকোদের দৌরাত্ম থামাতে বেশি সক্রিয় হয়ে উঠলে টার্গেট করে ডাম্পারে পিষ্ট করে হত্যা করে চালক বাপ্পি।

ঘটনার পরদিন থেকে সম্ভাব্য অনেক জায়গায় আসামিদের খোঁজাখুঁজি শুরু করে পুলিশ।

অবশেষে উখিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত), এসআই কাউসার হামিদ, মোবারক হোসাইন সঙ্গীয় ফোর্স সোমবার চট্টগ্রাম থেকে বাপ্পি কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এর আগে ঘটনার দিন ৫নং আসামি ছৈয়দ করিমকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মঙ্গলবার(৯ এপ্রিল) সকালে উখিয়া থানা কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(উখিয়া সার্কেল) রাসেল জানায় পরিকল্পিতভাবে বিট কর্মকর্তা হত্যার ঘটনার বিস্তারিত। ঘটনার পর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে নিজেকে আত্নগোপন করে রাখে বাপ্পি এমনটি জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ডাম্পার থামানোর সংকেত দিলে তা অমান্য করে বিট কর্মকর্তা সাজ্জাদ কে পিষে দেয় বাপ্পি। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় সাজ্জাদের। হত্যাকাণ্ডের আগের দিন ঐ এলাকার কামাল উদ্দিনের একটি ডাম্পার জব্দ করলে ক্ষোভে বিট কর্মকর্তা সাজ্জাদ কে যেখানে পাবে মেরে ফেলার নির্দেশ দেন কামাল।

এদিকে, ঘটনার পর থেকে সারাদেশে বনবিভাগের কর্মকর্তারা ফুঁসে উঠে সাজ্জাদুজ্জামান সজলকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে। এমন ঘটনা যাতে আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। এ ঘটনায় জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনার দাবিও জানান বনবিভাগ, নেকম, আরণ্যক ফাউন্ডেশন, বাপা সহ পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো।

উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম জানিয়েছেন,”আমাদের উখিয়া রেঞ্জের সবচেয়ে সক্রিয় বিট কর্মকর্তা ছিলেন সাজ্জাদুজ্জামান। যখন যেখানে অপরাধ সংঘটিত হয়ছে খবর পায় দিনরাত সে ছুঁটে চলে। তাকে টার্গেট করে হত্যা করেছে পাহাড়খেকোরা। আমরা কেনোমতে এটি মেনে নিতে পারছিনা। পাহাড়খেকোদের বিরুদ্ধে আমরা সরকারি দায়িত্ব পালনে একপাও পিছপা হবোনা।”

মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতার বিষয়ে উখিয়া থানার ওসি মো.শামীম হোসেন জানিয়েছেন,”আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। জড়িতদের সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে। আপনাদের কাছে তথ্য থাকলে আমাদের জানাবেন।”

উল্লেখ্য, গত ৩১শে মার্চ দিবাগত রাত তিনটার দিকে অবৈধ মাটি বালু পাচারের খবরে সরকারি দায়িত্ব পালন করতে গেলে ডাম্পার পিষ্ট করে বিট কর্মকর্তা সাজ্জাদকে হত্যা করে। এরপর হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে সারাদেশে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বনবিভাগের কর্মকর্তারা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে মানববন্ধন করেন।