রিফাত হত্যায় ছক কষা হয় ৭ দিন ধরে!

বার্তা২৪

বরগুনা সরকারি কলেজ গেটে গত মঙ্গলবার (২৬ জুন) স্ত্রীর সামনে শাহ নেওয়াজ রিফাত শরীফ (২৫) নামের এক যুবককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড ও তার সঙ্গীরা। এ ঘটনায় নিহত রিফাতের বাবা ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও পাঁচ থেকে ছয় জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলায় বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকাল থেকে দিবাগত রাত পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে মূল ঘাতক নয়ন ছাড়াও মামলার দুই নম্বর আসামি রিফাত ফরাজী, তিন নম্বর রিসান ফরাজীসহ বেশ কয়েকজন এখনো পলাতক।

পুলিশ বলছে, সকালে মামলার চার নম্বর আসামি চন্দন, দুপুরে মামলার নয় নম্বর আসামি মেহেদী হাসান এবং বিকেলে নাজমুল ও মহারাজ নামে অপর দুইজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ সূত্র বলছে- তদন্ত চলাকালীন ও গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, রিফাতকে খুন করার ছক সাতদিন ধরে কষা হয়। খুনের আগের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাতে চূড়ান্ত বৈঠক হয়।

এর ধারাবাহিকতায় বুধবার সকাল থেকেই রিফাতের গতিবিধি উপর নজর রাখে ঘাতক নয়ন ও তার সঙ্গীরা। রিফাত তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকার সঙ্গে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে দেখা করবে এমন ধারণাতে আগে থেকেই কলেজের সামনে অবস্থান করছিলেন তারা।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা আরও বলছেন, প্রথমে অন্যরা রিফাতের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক করলেও নয়ন ও রিফাত ফরাজী সামনে আসেনি। তর্কের এক পর্যায়ে তারা দু’জন রিফাতের ওপর কোপাতে থাকেন। রিফাতকে নিস্তেজ করেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বলছেন, রিফাতের শরীরে বেশ কয়েকটি কোপের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আটটি কোপ গুরুতর ছিল। এছাড়া তার ঘাড়ের রগ কেটে গিয়েছিল। মূলত রক্তশূন্যতায় রিফাত মারা যান।

এদিকে, রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া রিফাত হত্যাকাণ্ডের সব আসামিকে দ্রুতই গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড সঙ্গে জড়িত সবাইকে ধরা হবে। সবাইকে আইনের সামনে আমরা হাজির করব।’

ঘটনার বর্তমান অবস্থা সর্ম্পকে জানতে চাইলে বরগুনা পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন বলেন, ‘অভিযান অব্যাহত আছে। এখন পর্যন্ত এজাহারভুক্ত দুজন, ও তার বাইরে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে, কিছু তথ্য পেয়েছি। অন্যদেরও গ্রেফতারের আওতায় আনতে অভিযান চলছে।’

ঘটনার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশের বরিশাল রেঞ্জের (ডিআইজি) শফিকুল ইসলাম বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাতে বলেন, ‘এই নৃশংস ঘটনায় কেউ ছাড় পাবে না। জড়িতদের সবাইকে আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি। তাদের সবাইকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।’