রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভাড়ায় মহেশখালীর অস্ত্রের কারিগররা

রাশেদ হাসান, বার্তা২৪ :

আগ্নেয়াস্ত্রকে খেলনার মত ব্যবহার করছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসী গ্রুপের প্রতিটি সদস্যের হাতে হাতে রয়েছে দেশি বিদেশি অস্ত্র।

যা দিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ সারা দেশে নানা অপরাধে জড়াচ্ছেন সন্ত্রাসীরা। ক্যাম্পে বর্তমান সময়ে চলমান অস্থিরতার মাঝে এই অবৈধ অস্ত্র প্রশাসনের কাছে নতুন করে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি গত কয়েক দিনের ব্যাবধানে সন্ত্রাসীদের গুলিতে রোহিঙ্গা শীর্ষ নেতাসহ আট জন নিহত হয়েছে।

এছাড়াও প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে চলছে সন্ত্রাসীদের নানান অস্থিরতা।

সম্প্রতি টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও রাজধানী ঢাকা থেকে অস্ত্রসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ সারা দেশে অস্ত্র সরবরাহ চক্রের সক্রিয় বেশ কিছু সদস্য।

তাদের দেয়া তথ্যমতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পকে তারা অবৈধ অস্ত্র তৈরির অন্যতম স্থান হিসেবে বেছে নিয়ে পাশের জেলা শহর, রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে সারা দেশেই সরবরাহ করছে অস্ত্র। আর অস্ত্রের মূল কারিগর হিসেবে ভাড়ায় কাজ করছে মহেশখালীর অস্ত্রের কারিগরেরা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, এখনও রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও কক্সবাজারের গহীন পাহাড়ে অস্ত্র বানাচ্ছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। তারা পাহাড়েই যন্ত্রাংশ ও বসিয়ে নিয়েছে লেদ মেশিন। তাদের অস্ত্র তৈরিতে কারিগর হিসেবে কাজ করছে মহেশখালী ও আশপাশের অস্ত্র তৈরির কারিগররা। তারা অস্ত্র প্রতি ৫-৬ হাজার টাকায় মহেশখালি থেকে গিয়ে অস্ত্র তৈরি করে দিয়ে আসেন। ক্যাম্প অনেকটা অস্ত্রের বাজারে পরিণত হয়েছে।

মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো আবদুল হাই বলেন, মহেশখালীর অস্ত্র ব্যবসায়ীরা গ্রেফতারের পর জামিনে বের হয়ে আবারও তারা পুনরায় একই কাজে ফিরছেন। আমরা প্রতিনিয়তই অভিযান পরিচালনা করি এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামসহ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছি।

কক্সবাজার জেলা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, কয়েক বছরে রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে ১৪টি দেশীয় পিস্তল, ৪৪টি এলজি, তিনটি বিদেশি পিস্তল, ৩০টি একনলা বন্দুক, ২৫টি দেশি বন্দুক, চারটি পাইপগানসহ প্রচুর পরিমাণ ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে৷ সব মিলিয়ে এই সময়ের মধ্যে ১২৩টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ৷

সিটিটিসি প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, কিছুদিন আগে পাহাড় এলাকার অবস্থা একটু খারাপ ছিল। সম্প্রতি সময়ে আমরা গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে।

অস্ত্র, অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামসহ কয়েকটি কারখানা থেকে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের দেয়া তথ্যমতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ক্যাম্পের নিয়ন্ত্রণ এখন শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে থাকবে।