কক্সবাজারের মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক পিছিয়ে !

ডেস্ক রিপোর্ট : কক্সবাজারকে একটি উন্নত ও পরিপূর্ণ পর্যটন নগর হিসেবে গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নজর রয়েছে। তাই আওয়ামী লীগ সরকার পরিকল্পিতভাবে কক্সবাজারে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। গত ৪ বছরে কক্সবাজারে ২২টি মেগা উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার। যেগুলো বাস্তবায়িত হলে পাল্টে যাবে কক্সবাজারের চেহারা। একই সঙ্গে জাতীয় অর্থনীতির বড় একটি অংশ কক্সবাজার থেকেই অর্জিত হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন খাতের কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন বিশেষ গুরুত্ব পায় আওয়ামী লীগ সরকারে। আর বৃহৎ প্রকল্পকে মেগা প্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত করে নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন করতে সেগুলোকে ফাস্ট ট্র্যাক প্রজেক্ট মনিটরিং টাস্কফোর্সের আওয়ায় আনাও হয়েছে।

কিন্তু আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এসব প্রকল্পে দৃশ্যমান অগ্রগতির লক্ষ্য ধরা হলেও নির্ধারিত সময় থেকে অনেক পিছিয়ে আছে বাস্তবায়ন।

কক্সবাজারের মেগা প্রকল্পগুলো হলো চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু-কক্সবাজার এবং রামু-ঘুমধুম রেলপথ নির্মাণ, মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল পাওয়ার প্রকল্প, মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প এবং সোনাদিয়া(বঙ্গবন্ধু) গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্প,সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট,কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করন, পেকুয়ার উজানটিয়া ইউনিয়নের করিয়ারদিয়ায় কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র, রামুতে দ্বিতীয় বিকেএসপি, ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস নির্মাণ, কোস্টগার্ডের স্টেশন নির্মাণ,বেজা কর্তৃপক্ষের পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চল(নাফ ট্যুরিজম পার্ক,সোনাদিয়া ইকো- ট্যুরিজম পার্ক,নাফ ট্যুরিজম পার্ক,মহেশখালী ট্যুরিজম পার্ক),মেরিন ড্রাইভ সড়ক’ প্রকল্প(বাস্তবায়িত) সহ আরও কয়েকটি প্রকল্প।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এসব প্রকল্পে দৃশ্যমান অগ্রগতির লক্ষ্য ধরা হলেও নির্ধারিত সময় থেকে অনেক পিছিয়ে আছে বাস্তবায়ন। বৃহৎ প্রকল্পকে মেগা প্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত করে নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন করতে সেগুলোকে ফাস্ট ট্র্যাক প্রজেক্ট মনিটরিং টাস্কফোর্সের আওয়ায় আনা হয়েছে

সংশ্লিষ্ট বাস্তবায়নকারী সংস্থার হিসাব মতে, ১৫ শতাংশের বেশি এগোয়নি মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ প্রকল্পের কাজ। যদিও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছেন তারা। এবার দেখে নেয়া যাক কয়েকটি মেঘা প্রকল্পের বাস্তবায়নের সর্বশেষ চিত্র….

দোহাজারী-রামু ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ:

চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজারের ঘুমধুম পর্যন্ত ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে সিঙ্গেল লাইনের ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ করছে রেলওয়ে। শুরুতে ২০১০ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য ছিল। পরবর্তী সময়ে নকশায় পরিবর্তন এনে বাস্তবায়নের নতুন মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২২ সাল পর্যন্ত।

তবে ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়ায় প্রকল্পটি ধীরগতিতে এগোচ্ছে। জানা গেছে, প্রকল্পের জন্য ৩৬৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা প্রয়োজন। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র ৩৭ একর অধিগ্রহণ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।

দোহাজারী-রামু রেলপথটি যৌথভাবে নির্মাণ করছে চীনা রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি), চীনা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি), তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ও ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড।

বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্য বলছে, চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ১৩ শতাংশ।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা কক্সবাংলাকে বলছেন, বিভিন্ন কারণে প্রকল্পের কাজ শুরু হতে দেরি হয়েছে। অগ্রাধিকারযুক্ত বেশির ভাগ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে, কাজের গতিও এসেছে। দৃশ্যমান অগ্রগতি শিগগিরই নজরে আসবে।

মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র:

বিদ্যুৎ খাতে গৃহীত সরকারের আরেকটি মেগা প্রকল্প কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র। এ প্রকল্পে ৬০০ মেগাওয়াট করে দুটি ইউনিটের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। ব্যয়ের মধ্যে জাপান দেবে ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। চুক্তি অনুযায়ী প্রকল্পের প্রথম ইউনিট ২০২২ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। যদিও চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত এ প্রকল্পের মোট ভৌত অগ্রগতি মাত্র ১৮ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ১৭ শতাংশ। কাজে ধীরগতির কারণে এ প্রকল্পের বাস্তবায়নকালও দুই বছর পিছিয়ে ২০২৪ নির্ধারণ করা হয়েছে।

সোনাদিয়া (বঙ্গবন্ধু) গভীর সমুদ্রবন্দর:

সোনাদিয়ায় একটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয় এ সরকারের গত মেয়াদে। প্রকল্পটির গুরুত্ব বিবেচনায় এটিকে ফাস্ট ট্র্যাকের আওতায় আনা হয়েছিল। প্রকল্পটির সমীক্ষা যাচাইসহ প্রারম্ভিক সব কাজই সম্পন্ন করেছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটির চূড়ান্ত বাস্তবায়নের