দুর্যোগেও দুর্গত মানুষের পাশে নেই উখিয়া-টেকনাফের এমপি

সমকাল •

শুনেছি আমাদের এমপি একজন নারী। সাবেক এমপি বদির স্ত্রী তিনি। কিন্তু ওনাকে তো কোনোদিন দেখিনি। গত তিন দিনে তিনি এক দিনের জন্যও আসেননি’– নাফ শিশুপার্কের সামনে দাঁড়িয়ে জেলে শৈবাল দাশ যখন এ কথা বলছিলেন তখন বিশ্বাস হচ্ছিল না কথাটা। কিন্তু ৭ কিলোমিটার দূরের জালিয়াপাড়াতে গিয়েও শুনলাম অভিন্ন অভিযোগ। টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নে এসেছিলেন সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদি। কিন্তু একবারের জন্যও দুর্গত এলাকায় যাননি বদির স্ত্রী এমপি শাহীন।

জানতে চাইলে এমপি শাহীন আক্তার ফোন রিসিভ করেননি। কথা বলেননি তাঁর স্বামী ও সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদিও।

তবে টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘এমপি ম্যাডাম একটু কম বের হন। তার হয়ে সব কাজ করছেন স্বামী ও সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদি। আজও সারাদিন দুর্গত এলাকায় ছিলেন তিনি। এমপি ম্যাডাম ফোনে যোগাযোগ রাখছেন।’

টেকনাফ পৌরসভার আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলী বাহাদুর বলেন, তিন দিন ধরে দুর্গত মানুষের পাশে আছেন সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদি। আমিও তাঁর পাশে থেকে সহায়তা করছি বিভিন্ন কাজে। বদির স্ত্রী শাহীন আক্তার বর্তমান এমপি হলেও তাঁর হয়ে সব কাজ করছেন স্বামী। তাই এলাকায় দেখা যায়নি বর্তমান এমপিকে। তবে টেলিফোনে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এমন দুর্যোগে যদি জনপ্রতিনিধিকে না পান তাহলে তিনি নির্বাচন করলেন কেন? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেকনাফ সরকারি কলেজের এক শিক্ষক বলেন, ‘একজন এমপির কাছে মানুষের প্রত্যাশা থাকে। দুঃসময়ে তাঁকে পাশে দেখতে চাওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু এটা যদি এমপি উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হন তবে তা দুঃখজনক। মানুষ তো তাঁদের কাছে সবসময় টাকা-পয়সা চায় না। চায় মায়া। চায় ভালোবাসা। এমপি পাশে থাকলে মানুষের সাহসও অনেক বেড়ে যায়।’

কিন্তু টেকনাফের এমপি শাহীন আক্তারকে গত তিন দিনে দেখেননি দুর্গত এলাকার কেউই। পৌরসভার চায়ের দোকানদার হেমায়েত উল্লাহ বলেন, ‘তাঁকে কেউ দেখেছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে না। তিনি নামের এমপি। টেকনাফ আসলে চালাচ্ছেন তাঁর স্বামী।’