রেজু ব্রীজ চেকপোস্টটি অন্যত্র স্থানান্তর করা হউক

রাসেল চৌধুরী •

 

বিজিবি একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী। তাদের প্রতি সম্মান রেখে বলছি, দীর্ঘ যানজট ও মানুষের চরম ভোগান্তি লাঘবে মেরিন ড্রাইভ সড়কের রেজু ব্রীজ চেকপোস্টটি অন্যত্র স্থানান্তর করা হউক (রেজুব্রীজের আগে অথবা আরও পরে)। অপরিকল্পিত ভাবে চেকপোস্টটি স্থাপন করার কারণে অনেক স্বপ্নের মেরিন ড্রাইভ সড়কটি এ অঞ্চলের মানুষের কাছে (জালিয়াপালং, হলদিয়া পালং, রত্নাপালং, রাজাপালং, পালংখালী ও টেকনাফ) আর্শীবাদের চেয়ে এখন অভিশাপে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষ।

বিশেষ করে এমার্জেন্সী রোগী নিয়ে যারা এই চেকপোস্টে আটকা পড়েছেন, তারাই জানেন এই ভোগান্তি কত যন্ত্রণা ও বেদনার। অনেকেই মুমূর্ষু রোগী নিয়ে আধঘণ্টা বা এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে তল্লাশি চৌকি পার হতে পেরেছেন ঠিকই কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছাতে পৌঁছাতে জীবন প্রদীপ নিভে গেছে অনেক রোগীর। এছাড়া দুরদুরান্ত থেকে মৃত আপনজনকে শেষ বারের মতো দেখতে এসে রেজুব্রীজ চেকপোস্টে আটকা পড়ে প্রিয়জনের চেহারা দেখতে, এমনকি জানাজায় শরিক হতে পারেনি এমন অসংখ্য বেদনাদায়ক নজিরও সৃষ্টি করেছে এই চেকপোস্ট। এই চেকপোস্টের কারণে সময়মত ইন্টাভিউ কক্ষে উপস্থিত হতে না পেরে শত শত চাকরি প্রার্থী ছেলেমেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, জরুরী প্রয়োজনে ঢাকাগামী শতশত বিমান যাত্রীর টিকেট বাতিল হয়েছে। এছাড়া ছাত্রছাত্রীদের কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং অফিস আদালতগামী চাকরিজীবীদের সময়মত স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হতে না পারা ঘটনা নিত্যদিনের।

দেশের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য চেকপোস্ট দেখেছি। কিন্তু তল্লাশির নামে ব্যস্ততম একটি সড়কের উভয় পাশে শত শত যাত্রীবাহী গাড়ী দাড়িয়ে থাকা ও তাদের চরম ভোগান্তিতে পড়ার দৃশ্য কোথাও দেখিনি।
যেটি দেখছি, প্রতিনিয়ত মেরিন ড্রাইভ সড়কের রেজু ব্রীজ চেকপয়েন্টে।

এমন চেকপোস্ট পৃথিবীর কোথাও আছে কিনা আমার জানা নেই। যে চেকপোস্টে তল্লাশি হয় একদিকের যাত্রীবাহী গাড়ী আর ভোগান্তিতে পড়ে বিপরীত মুখি শতশত যাত্রীবাহী গাড়ী।

এখানে একটি বিষয় উল্লেখ্য, মেরিন ড্রাইভ সড়কে আরও ৬ টি চেকপোস্ট রয়েছে। ওইসব চেকপোস্টে কিন্তু এতো দীর্ঘ যানজট হয় না। এর কারণ হচ্ছে চেকপোস্ট গুলোর উভয় পাশের রাস্তা প্রশস্ত। রাস্তা প্রশস্ত হওয়ায় ওইসব চেকপোস্টে দুদিকে গাড়ী চলাচলের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু রেজুব্রীজটি সরু হওয়ায় একমুখী গাড়ী চলাচল ছাড়া বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেই। রেজুব্রীজ পার হওয়ার পরপরই চেকপোস্ট হওয়ায় কক্সবাজার মুখি গাড়ীগুলো তল্লাশি হলে উখিয়া-টেকনাফ মুখি গাড়ীগুলোকে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে আটকা পড়তে হয়।

সরু ব্রীজের পর চেকপোস্ট স্থাপন করা না হলে নিশ্চই প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষকে দীর্ঘ যানজটের এই ভোগান্তি পোহাতে হতো না। তাই মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার পর্যটক, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাতায়াতকারী শত শত চাকরিজীবী ও স্থানীয় মানুষের ভোগান্তি লাগবে স্থায়ী সিদ্ধান্তে পৌঁছা উচিত বলে মনে করি।

এক্ষেত্রে রেজু ব্রীজ চেকপোস্টটি সরু ব্রীজের পরে না রেখে অন্যান্য প্রশস্ত সড়কে স্থাপন করা চেকপোস্টের মতো অন্যত্র স্থানান্তর করা হলে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে বলে আমার অভিমত।

জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে একটি কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল দায়িত্বশীল মহল ও সচেতন ব্যক্তিবর্গের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।