অভিনব কায়দায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসা

ডেস্ক রিপোর্ট • বঙ্গবন্ধুর প্রতি মানসিক ভাবনা ও ভালোবাসার নিদর্শনের রূপ জমিনেই ফুটিয়ে তুলেছেন কৃষক আব্দুল কাদির। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, নৌকা, স্মৃতিসৌধ, শতবর্ষ লিখনি ছাড়াও জমিনের চারপাশে ‘লাভ’ চিহ্ন নকশা করেছেন সরিষা ও লাল শাক দিয়ে। মোট ৩২ শতক জমিতে শৈল্পিক বুননে ফসলের মাঠকে করে তুলেছেন দৃষ্টিনন্দন। প্রতিদিন শতশত মানুষ কৃষক কাদিরের ক্ষেত দেখতে ভিড় করছেন।

আব্দুল কাদিরের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নের পাড়াখালবালা গ্রামে। তিনি হাজি তারা মিয়ার দ্বিতীয় পুত্র। সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শতশত উৎসুখ লোক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কৃষি কর্মকর্তা ছাড়াও এসেছেন অনেক নারী। ক্ষেতে চোখ পড়লে দেখা যায় ছবির মতো আঁকা নৌকার পাশে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ছাড়াও স্মৃতিসৌধ ও শতবর্ষ লিখনি। যেন কোনো শিল্পী এঁকে রেখেছেন।

সরিষা ও লাল শাক বুনন এমন ভাবেই করা হয়েছে যা ফুটে উঠেছে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও নৌকাসহ স্মৃতিসৌধ। বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে উঁচু টাওয়ার। যেখানে উঠে ছবি তুলছেন অনেকেই। কথা হয় কৃষক আব্দুল কাদিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকে পাওয়া রবি শস্য সরিষা ও লাল শাক প্রদর্শনী প্লটে চিত্রকলার আলোকে বীজ বপন করে কিছু নতুনত্ব সৃষ্টি করা যায় কি-না এমন চিন্তা থেকেই এই কাজ করা। এর মধ্যে ঘটে যায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে বিতর্ক। ঘটে কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ভাঙচুর। সর্বক্ষেত্রেই প্রতিবাদ হচ্ছে। এই প্রতিবাদ জানাতেই তিনি জমিন চাষ করে প্রথমে চিত্রাঙ্কন করে বঙ্গবন্ধুর মুখায়ব আঁকেন। নৌকা, স্মৃতিসৌধ ছাড়াও ‘লাভ’ এর অক্ষর আঁকেন। চিত্ররেখার মাঝেই বারী-১৫ জাতের সরিষা ও লাল শাকের বীজ বপন করেন। জমিনে সেই বীজ গজানোর পর পুরো ক্ষেত যেন জীবন্ত ছবির মতো রূপ ধারণ করে।

অনেকেই এর নাম দিয়েছে জমিনেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসা। এই কারুকার্যময় চিত্ররূপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় তা দেখার জন্য প্রতিদিন শতশত মানুষ ক্ষেতের পাশে ভিড় করছে। তুলছে সেলফি।

ক্ষেত ঘুরে দেখা যায় দুই পাশে রয়েছে দুটি নৌকা, মাঝখানে বড় আকারের বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, আরেক পাশে স্মৃতিসৌধ ও চারপাশে চারটি লাভ। কাদির বলেন, আমার নেতা বঙ্গবন্ধুর জন্য কিছু করতে পারলাম না। তাই এখন থেকে প্রতিবছর এই মৌসুমে বিজয়ের মাসে আমার এই ক্ষেতটিতে এ ধরনের নকশি একে বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করব। মানুষ জানবে, বঙ্গবন্ধুকে কখনো ভাঙা বা মুছে ফেলা যায় না।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, এ কেমন ভালোবাসা। যা দেখে নিজেই চমকে গেলাম। যা আমরা পারছি না। তা দেখিয়ে দিলেন কৃষক আব্দুল কাদির। আমার জানা মতে এটাই দেশের প্রথম জমিনে চিত্রাংকনসহ ভালোবাসার নিদর্শন।