এলাকায় ‘অমায়িক’ আলী, আড়ালে পাঁচ খুনের আসামি

ডেস্ক রিপোর্ট •

মাথায় টুপি দিয়ে চলাফেরা করতেন ভদ্রবেশে। খুব সহজে কারো সাথে ঘনিষ্ঠতা গড়তেন না, তবে কেউ বিপদে পড়লে সহায়তা করতে এগিয়ে আসতেন সবার আগে।

বছর নয়েক আগে রাজশাহীতে থিতু হয়ে কোটি টাকার সম্পদ গড়া আলীকে এলাকাবাসী চিনতেন ‘অমায়িক’ মানুষ হিসেবে। অথচ কেউ বুঝতেই পারেননি তাদের চেনা এই অমায়িক মানুষটিই চাঞ্চল্যকর জাসদ নেতা কাজী আরেফ হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রওশন!

গত ১৮ আগস্ট র‍্যাবের হাতে ধরা পড়ার পর বেরিয়ে আসে তার অপরাধ জীবনের লোমহর্ষক কাহিনী।

এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহী নগরীর ডাঙ্গিপাড়ায় বনছায়া আবাসিক এলাকায় তিনি পরিচিত ছিলেন উদয় মণ্ডল ওরফে আলী নামে। সেখানে এখনও নির্মাণাধীন আছে তার চারতলা বাড়ি। ব্যক্তি উদ্যোগে তিনি ওই এলাকায় নির্মাণ করছেন মসজিদও। নগরীতে রয়েছে তার আছে আরেকটি দোতলা বাড়িও। কিনেছেন বনছায়া আবাসিক এলাকার একটি বড় অংশ।

এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০০১ সালে পরিবার নিয়ে তিনি রাজশাহী আসেন। এরপর মাত্র নয় বছরে এই এলাকায় বিপুল সম্পদ গড়ে তোলেন জমির দালালি করে।

রওশনের আত্মীয় এখলাস আলী বলেন, আজ থেকে নয় বছর আগেও তার এত সম্পদ ছিল না। মেয়ের চিকিৎসার জন্য তাকে হাত পারতে হতো পাশের বাড়ির মানুষের কাছে।

রওশনের প্রতিবেশীরা জানান, বিরোধপূর্ণ জমি কেনাবেচায় তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। তবে কখনোই এমন কারবারে প্রকাশ্যে আসতেন না তিনি।

এক ভুক্তভোগী জানান, এই বনছায়া এলাকা থেকে প্লট কিনেছি, আমাকে প্লটও বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে না, টাকাও দেয়া হচ্ছে না। রওশন পেছন থেকে সব করতো কিন্তু কখনো স্পটে আসতো না।

এ পর্যন্ত সবই ঠিকঠাক ছিলো। তবে, গোল বাঁধে সম্প্রতি র‍্যাব তাকে আটক করলে। সামনে আসে, উদয় মণ্ডল বা আলী নয়, তিনি আসলে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জাসদ নেতা কাজী আরেফ হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রওশন।

১৯৯৯ ও ২০০০ সালে কুষ্টিয়া ও মেহেরপুরে পরপর পাঁচটি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে রওশনের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে দুটি মামলায় তার বিরুদ্ধে ফাঁসির দণ্ডও রয়েছে। বাকি তিনটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।