রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন পেতে আগে সংসদ নির্বাচন লাগবে না

ডেস্ক রিপোর্ট ◑  কোনো রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন পেতে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের শর্ত পূরণের প্রয়োজন নেই। এক্ষেত্রে অন্যান্য শর্ত পূরণ করলেই নিবন্ধন পাওয়া যাবে। এমন বিধান রেখে ‘রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন-২০২০’ এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে।

২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করে তাতে ছয়(এ) অধ্যায় যুক্ত করে দল নিবন্ধনের আইনগত ভিত্তি দাঁড় করিয়েছিলো ইসি। বর্তমানে আরপিও থেকে সেই অধ্যায়টি তুলে দিয়ে নতুন একটি আইন করার উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটি।

২০০৮ সালের আরপিওর বিধান অনুযায়ী, নিবন্ধন পাওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে তিনটি বিষয়ের মধ্যে দু’টি পূরণের বাধ্যবাধকতা দেয়া হয়েছিল।

প্রথমত, সে সময় নিবন্ধন পেতে হলে স্বাধীনতার পর থেকে যে কোনো দু’টি সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ থাকতে হবে। এক্ষেত্রে দু’টি নির্বাচনে অংশ নিয়ে দলীয় প্রতীকে কমপক্ষে একটি আসন পেতে হবে।

দ্বিতীয়ত, যেসব আসনে অংশ নিয়েছিল সংশ্লিষ্ট দলের প্রার্থীরা, সেসব আসনে প্রদত্ত ভোটের ৫ শতাংশ পেতে হবে।

তৃতীয়ত, দলটির একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, দেশের এক তৃতীয়াংশ জেলা ও ১০০ উপজেলায় কমিটি ও কার্যালয় থাকতে হবে এবং প্রতিটি উপজেলায় কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থন থাকতে হবে। এই তিনটি প্রধান শর্তের মধ্যে যে কোনো দু’টি শর্ত পূরণ করলেই সংশ্লিষ্ট দলকে নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্য হিসেবে ধরা হতো।

এসব শর্ত পূরণ করেই ইসিতে ৪১টি দল নিবন্ধিত রয়েছে।

তবে এরপর থেকে অতীতের কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ইতিহাস না থাকলেও ইসি থেকে দলের নিবন্ধন পাওয়া যাবে।

এ বিষয়ে ইসি সচিব মো. আলমগীর জানান, ২০০৮ সালের আইন এখনো বলবৎ আছে। সে অনুযায়ী, নিবন্ধন ছাড়া কোনো দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ নেই। এখন একটা নতুন দল গঠন হলো, সে দল যদি নিবন্ধিত হতে চায়, তবে এই বিধানের কারণে নিবন্ধন পাবে না। কেননা, নিবন্ধন না থাকায় সে দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। আর নির্বাচনে অংশ না নিতে পারলে সে নিবন্ধন পাবে না। তাই বিধানটি তুলে দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, নিবন্ধন পেতে হলে অন্যান্য কিছু শর্ত আগের মতোই থাকছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শাস্তির বিষয়টি বাড়ানো হচ্ছে। আর চাঁদা সংগ্রহ করার পরিমাণও কিছুটা বাড়ানো হচ্ছে। আর কোনো দল নিবন্ধন পাওয়ার পর যদি পরপর দু’টি নির্বাচনে অংশ না নেয়, তবে নতুন আইনের খসড়ায় সেই দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রাখা হয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, দলের প্রতিটি পর্যায়েরর কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য পদ পূরণের সময়সীমা শেষ হচ্ছে ২০২০ সালেই। তাই দলগুলোকে আরো পাঁচ বছর সময় দেয়ার বিষয়টি খসড়ায় রাখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে এই শর্তটি পূরণে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময় পাচ্ছে দলগুলো। পাঁচ বছর সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।