রোহিঙ্গা ইয়াহিয়া এখন বাংলাদেশী!

নিজস্ব প্রতিবেদক :

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত কক্সবাজার সহ সারা দেশে রোহিঙ্গারা বিভিন্ন ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে মোটা অংকের টাকা ব্যয় করে জাতীয় পরিচয় পত্র সংগ্রহ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে একশ্রেণীর দেশীয় দালালের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের ম্যানেজ করে বেশিরভাগ রোহিঙ্গারা জাতীয় পরিচয় পত্র সহ জন্ম নিবন্ধ ও বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে এসব নামে-বেনামের রোহিঙ্গারা। এমনকি রোহিঙ্গা শিবিরের বাইরে অবস্থান নিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী ও অপরাধ মুলক কর্মকান্ড চালিয়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাচ্ছে।

শুধু তাই নয়, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নরসিংদী, হবিগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, ঢাকা, সিলেট, নোয়াখালী, লক্ষীপূর, ফরিদপুর, রাজশাহী, পাবনা, মৌলোবীবাজার, বান্দরবান জেলা ও উখিয়া টেকনাফ সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দালালদের মাধ্যমে চেয়ারম্যান, মেম্বার ও কাউন্সিলরদের মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জাতীয় পরিচয় পত্র ও জন্মনিবন্ধন সংগ্রহ করে চালিয়ে যাচ্ছে নানা অপরাধ কর্মকান্ড।

এতে করে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি সহ সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে ওই চক্রটি। এছাড়াও দেশের কাগজপত্রাদি সংগ্রহ করে জায়গা জমি ক্রয় বিক্রয়, নামে-বেনামে ব্যাংক একাউন্ট, গাড়ি বাড়ি, ব্যবসা বানিজ্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে এসব অঘোষিত রোহিঙ্গারা।

সম্প্রতি কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী এলাকায় সন্ধান পাওয়া গেছে ইয়াহিয়া নামের এমনই একজন রোহিঙ্গার। তার নাম মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, পিতা মৃত ইউসুফ। সে টাকার বিনিময়ে জাতীয় পরিচয় পত্র বা এনআইডি সংগ্রহ করে কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলীতে নিরাপদে বসে জায়গা জমি, মানবপাচার, খুন, রাহাজানি, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি সহ আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলে ইয়াহিয়ার আত্মীয় স্বজন (যারা উখিয়ার লাম্বাশিয়া ক্যাম্পে রয়েছে) সাথে কথা বলে জানা গেছে।

  • তার এনআইডি নাম্বার ২২২২৪০৩৩৮৬০৯১ এবং ইসলামি ব্যাংক কক্সবাজার শাখার হিসাবে নং ৫২৬৭২।

ইতিপূর্বে কক্সবাজারের পাহাড়তলীয় শহর কেন্দ্রীক যে সব অপরাধ কর্মকান্ড খুন, চুরি, ডাকাতি, মানবপাচারের মত জঘন্য ঘটনার সংগঠিত হয়েছে এসবের নেপথ্যে নাটের গুরুর ভুমিকায় সেই আলোচিত রোহিঙ্গা ইয়াহিয়া। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধরপাকড় এড়াতে কৌশলে শহরের পাহাড়তলীতে অবস্থান নিয়েছে ওই ইয়াহিয়া।

স্থানীয়রা জানান, কক্সাবাজার সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় রোহিঙ্গারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জনপ্রতিনিধি ও মেয়ের-কাউন্সিলর মেম্বার-চেয়ারম্যানদের হাতে নিয়ে এসব অপরাধ কর্মকান্ড ঘটানোর কাজে দিব্যি সহযোগিতা করার অভিযোগ রয়েছে। ইতিপূর্বে সরকার যখন মানবপাচারের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করে ওসি প্রদীপের কথিত সেই সিরিজ ক্রসফায়ার আতংকে আত্নগোপনে চলে যায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শরনার্থী এই ইয়াহিয়া। এছাড়াও মানবপাচার ও ইয়াবা সংক্রান্ত ঘটনার ভাগবাটোয়ায় বনাবনি না হওয়ায় শহরের পাহাড়তলীতে অসংখ্য খুনের ঘটার জড়িত এ ইয়াহিয়া। যদিও দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি এড়াতে ইয়াহিয়া শহরের পাহাড়তলীতে অবস্থান নিয়ে আত্নগোপনে আছে। দীর্ঘদিন ধরে শহরে বসবাস করার সুবাদে স্থানীয়দের সাথে সখ্যাতা গড়ে তুলে কালোটাকার বিনিময়ে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে এনআইডি জন্ম নিবন্ধ সহ সরকারি দপ্তরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে একটি স্থানীয় অপরাধী চক্রের সিন্ডিকেট রয়েছে ইয়াহিয়ার হাতে। থানা কোর্ট, আদালত, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা মাঝেও রয়েছে কথিত ইয়াহিয়ার এজেন্ট।

অনুসন্ধানে জানাগেছে, শহরের পাহাড়তলীতে যেসব রোহিঙ্গারা এনআইডি সংগ্রহ করে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে তাদেরকেও বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার ব্যাপারে কাজ করেছে এই অঘোষিত ডন জঙ্গি ইয়াহিয়া।

ক্যাম্প ০৯ এর আবদুর শুক্কুর নামের এক রোহিঙ্গা বলেন, বাংলাদেশ সরকারের পুলিশ প্রশাসন যদি এ অপরাধী ইয়াহিয়ার ব্যাপারে তদন্ত ও অনুসন্ধান করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। কক্সাবাজারে বসে মানবপাচার, ইয়াবা চোরাচালান ও জাল টাকার মত জঘন্য দেশদ্রোহী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে এ ইয়াহিয়া।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা জানান, এ অপরাধীর ব্যাপারে সুস্থ তদন্ত, পর্যবেক্ষণ, অনুসন্ধান এবং পুলিশি এ্যাকশন জোরালো ভাবে চালালে ইয়াহিয়ার আসল মুখোশ উন্মোচিত হবে।

ভুক্তভোগী টেকনাফ মুছনি এলাকার এক মহিলা এই ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নির্বাচন কমিশন ও জেলা প্রশাসক-জেলা পুলিশ সুপার সহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন নিকট আশু হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

কথিত ইয়াহিয়ার আদ্যোপান্ত জানতে প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার একটি টিম কাজ করছে।