১৩ মাসে স্বহস্তে লিখলেন পুরো কোরআন শরীফ

স্বহস্তে পবিত্র কোরআন লিখলেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়ন শীতলপুর এলাকার মোহাম্মদ রফিকুল আলমের ছেলে মোহাম্মদ তাহসিন আলম (২১)। টানা এক বছর এক মাসের প্রচেষ্টায় তিনি পবিত্র কোরআনের ৩০ পারাই হাতে লিখেছেন। তাহসিন বর্তমানে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসায় ফাজিল প্রথম বর্ষ ও চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের ইসলামিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করছেন।

জানা যায়, গত বছরের জুন মাসের ১৯ তারিখ থেকে কোরআন শরীফ লেখা শুরু করেন। শেষ করেন চলতি বছরের জুলাই মাসের ২৮ তারিখ। ৩০ পারা কোরআন হাতে লিখতে তাহসিনের এ–ফোর সাইজের কাগজ লেগেছে ৬০০টি। কলম লেগেছে ৫০টির মতো। এ কাজে তাহসিনের ব্যয় হয়েছে দৈনিক পাঁচ ঘণ্টা।

তাহসিন বলেন, বর্তমানে আমাদের বয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে ফেসবুক আসক্তি ব্যাধির মত ছড়িয়ে পড়েছে। প্রায় সময় কারণে–অকারণে বেশির ভাগ সময় আমরা ফেসবুকে সময় দিচ্ছি। এতে আমাদের সময় নষ্ট হচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে সৃষ্টিশীলতা, কর্মক্ষমতা। কিন্তু আমি আল্লাহ ও রাসুলের (সা.) সন্তুষ্টি অর্জন ও ফেসবুক ইউটিউব আসক্তি থেকে মুক্ত থাকতে পবিত্র কোরআন লেখায় সময় ও মনযোগ দিয়েছি। তিনি বলেন, প্রথম দিকে আমি দৈনিক এক ঘণ্টা সময় ব্যয় করতাম। পরে আলিম পরীক্ষার পর অবসয় সময়ে দৈনিক পাঁচ ঘণ্টা সময় দিয়ে গত ২৮ জুলাই কোরআন শরীফ লেখা সম্পন্ন করেছি।

তাহসিনের পিতা ব্যবসায়ী রফিকুল আলম বলেন, আমার ছেলে তাহসিন আলম যে কাজটা করেছে তাতে আমি অনেক খুশি। আমি দেশবাসীর কাছে আমার ছেলের জন্য দোয়া চাচ্ছি। তাহসিনের মাতা লাকি আক্তার বলেন, আমার ছেলে পড়ালেখা ছাড়া বাকি সময়টাতে কোরআন শরীফ লিখতে বসে যেত। অনেক সময় গভীর রাত পর্যন্ত কোরআন শরীফ লিখেছে সে।

তাহসিনের এমন উদ্যোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা জসিম উদ্দিন আল আযহারী দৈনিক আজাদীকে বলেন, পবিত্র কোরআন হাতে লেখার উদ্যোগ নিয়ে সম্পন্ন করার কাজটি অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।

উল্লেখ্য, এর আগে স্বহস্তে পবিত্র কোরআন লিখেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০১৪–১৫ সেশনের ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জারিন তাসনিম দিয়া। টানা দেড় বছরের প্রচেষ্টায় তিনি কোরআন শরীফের ৩০ পারাই হাতে লিখেছেন।