কক্সবাজার সদর হাসপাতাল: সেবার ধরন বদলেছে, কমেনি দুর্ভোগ

মুহিবুল্লাহ মুহিব :

২৫০ শয্যার কক্সবাজার সদর হাসপাতাল। দফায় দফায় সংকটের মুখ থেকে ফিরে সেবার ধরন বদলানো হলেও এখনো কমেনি দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের দুর্ভোগ। রয়েছে বেড সংকটও। শয্যার চেয়ে অধিক রোগী আসলেই হাসপাতালের ফ্লোরে রোগীদের স্থান দিতেও দেখা গেছে।

জানা যায়, সম্প্রতি চিকিৎসকদের উপর হামলার অভিযোগে দফায় দফায় ধর্মঘটের পর আবারও পুরোদমে চালু হয়েছে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা। এরপর নতুনভাবে সাজানো হয় চিকিৎসা সেবার ধরণ। কিন্তু এতকিছুর পরও দুর্ভোগ কমেনি রোগীদের। কারণ বেড সংকট, লোডশেটিংসহ নানান কারণে দুর্ভোগে পড়তে হয় রোগী ও তার স্বজনদের। আগের মত কমিশন বাণিজ্য বন্ধ হলেও কমেনি দালালদের দৌরাত্ম্য।

কক্সবাজার জেলার অর্ধ কোটি মানুষের প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্র হচ্ছে জেলা সদর হাসপাতাল। জেলাবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এ হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রম চালু করা হয়। যা পরবর্তী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে স্বীকৃতি দেয়া হয়। সদর হাসপাতালকে ২৫০ শয্যা উন্নিত করা হলেও ১৫০ শয্যা হাসপাতালেরও জনবল নেই এখানে। এতে সেবাদানে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে রোগী ও স্বাজনদের। প্রতিদিন সকালে আউটডোরে ডাক্তার দেখাতে হাসপাতালের কাউন্টারের সামনে গাদাগাদি করে নারী-পুরুষ অপেক্ষা করে টিকেটের জন্য। টিকেট নিয়ে রোগী ও স্বজনরা ভিড় জমান নির্দিষ্ট রোগের ডাক্তারদের সামনে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা পর কেউ কেউ সাক্ষাৎ পান, অনেকে আবার সাক্ষাৎ না পেয়ে  বাড়ি ফিরে যান। এর মধ্যে কেউ কেউ সঠিক সময় চিকিৎসা পেয়ে বেজায় খুশি। কারো কারো মুখে শোনা যায় আক্ষেপ।

রোগী ও তার স্বজনরা জানান, হাসপাতালের ৪র্থ তলা মহিলা ওয়ার্ডে সারা বছরই রোগীদের ভিড় থাকে। এতে চরম দুর্ভোগে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। স্থান সংকুলন না হওয়ায় এক বেটে ২ মহিলাকে চিকিৎসা দিতে হয়। আবার বিছানা না পেয়ে হাসপাতালের মেঝে-বারান্দায় থাকতে হয়। ফলে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসক ও নার্সদের।

পিএমখালী থেকে আসা রোগীর স্বজন মেহরাব হোসেন বলেন, হাসপাতালে সবসময় সিট ফাঁকা পাওয়া যায় না। তাছাড়া হাসপাতালের পরিবেশ নোংরা হওয়ায় নিজেরাই অসুস্থ বোধ করেন। অনেকে আবার বেড না পেয়ে বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।

মরিচ্যা থেকে আসা রাজিয়া বেগম বলেন, এসেছি দীর্ঘক্ষণ হচ্ছে এখনো বেড পাইনি। অনেকে বলছে বারান্দায় থাকতে হবে।

রাজিয়ার মতো বৃদ্ধ রহিমা বেগম ভর্তি হয়েছেন আরও দুইদিন আগে কিন্তু এখনও তার বেড হাসপাতালের বারান্দায়। রহিমা বেগম বলেন, ডাক্তার সময় মত আসছে না। তাদের মন চাইলে আসছে আর না চাইলে আসছে না বলে অভিযোগ তার।

তবে হাসপাতালে আসন সংকটের কথা স্বীকার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা: মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ২৫০ শয্যার হাসপাতালে রোগীর ভর্তি রয়েছে ৬ শতাধিক। তাহলে কিভাবে সঠিক চিকিৎসা দেব। আর বেড সংকটও দীর্ঘদিনের। এ বিষয়ে আমরা উচ্চ পর্যায়ে জানিয়েছি। আশা করছি খুব দ্রুত এর একটা সমাধান আসবে।