কক্সবাজার ২: বিএনপি-জামায়াত উভয়েই আসন পুনরুদ্ধারে তৎপর

এম.এ মান্নান •

কক্সবাজার -২ (কুতুবদিয়া-মহেশখালী) আসনে আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আসনটি পূণ:উদ্ধারে বিএনপি-জামায়াত উভয়েই জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

গত ৩ দশকে ৭‘টি সংসদ নির্বাচনে (১৯৯১-২০১৮) আওয়ামীলীগ ৩বার, বিএনপি ৩ বার ও জামায়াত থেকে একবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর আগে ১৯৮৮ তে জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন কুতুবদিয়ার উইং কমান্ডার জহিরুল ইসলাম।

১৯৯১ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারি ৫ম সংসদ নির্বাচনে মহেশখালীর বাসিন্দা (প্রয়াত) মো: ইসহাক মিয়া নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একই এলাকার বাসিন্দা মো: রশীদ মিয়া বিএনপি থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করে অল্প ভোটে হেরে যান।

১৯৯৬ সালে ৬ষ্ঠ সমালোচিত ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুতুবদিয়ার বাসিন্দা জেলা বিএনপি‘র সহ-সভাপতি এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী বিএনপি‘র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একই বছর ১২ জুন ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহেশখালীর বাসিন্দা আলমগীর মুহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ ধানের শীষ নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন।

এবছর জামায়াত থেকে কুতুবদিয়ার বাসিন্দা মাষ্টার শফিউল্লাহ কুতুবীও প্রতিদ্বন্ধিতা করেন দাড়িপাল্লা নিয়ে। ২০০১ সালে ৮ম সংসদ নির্বাচনে ৪ দলীয় ঐক্যজোট থেকে ফের আলমগীর মুহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবছর কুতুবদিয়ার বাসিন্দা নৌকা প্রতীক নিয়ে বর্তমান জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও কুতুবদিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী প্রতিদ্বন্ধিতা করেছিলেন।

২০০৮ সালে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোট থেকে জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারি সেক্রেটারী জেনারেল কুতুবদিয়ার বাসিন্দা আলহাজ এ.এইচ.এম হামিদুর রহমান আযাদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবছর আওয়ামীলীগ থেকে পরিবেশ বিজ্ঞানী মহেশখালীর বাসিন্দা প্রফেসর ড: আনসারুল করীম নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে হেরে যান।

২০১৪ সালের ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহেশখালীর বাসিন্দা ছাত্রনেতা থেকে উঠে আসা আশেক উল্লাহ রফিক আওয়ামীলীগ থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামীলীগ থেকে ফের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট বদ্ধ না থাকলে জামায়াত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কুতুবদিয়া-মহেশখালী আসনে ইতিমধ্যে হামিদুর রহমান আযাদকে নিশ্চিত প্রার্থী ঘোষণা করেছে। আর যদি বিএনপির সাথে জোট থাকে সেক্ষেত্রে বিএনপি‘র অন্তত ৪ জন সম্ভাব্য প্রার্থীকে টপকিয়ে তাকে প্রার্থী হতে হবে।

বিএনপি‘র সম্ভাব্য তালিকায় বিএনপি‘র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি আলমগীর ফরিদ, সাবেক সাংসদ জেলা বিএনপি‘র, সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী, উপজেলা বিএনপি‘র সভাপতি জালাল আহমদ ও মহেশখালীর এডভোকেট মোহাম্মদ আলম প্রার্থী হতে আবেদন করবেন বলে কুতুবদিয়া উপজেলা বিএনপি‘র সভাপতি জালাল আহমদ জানিয়েছেন।

অপরদিকে সরকার দলীয় আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা বেশ বড়। দীর্ঘ দশ বছরের জনপ্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়ে শীর্ষে রয়েছেন বর্তমান এমপি আশেক উল্লাহ রফিক এছাড়া কেন্দ্রীয় আ‘লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, পরিবেশ বিজ্ঞানী সাবেক প্রার্থী প্রফেসর ড: আনছারুল করিম, জেলা আ‘লীগের সভাপতি কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাবেক প্রার্থী এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, মহেশখালী উপজেলা আ‘লীগের সাধারণ সম্পাদক কালারমার ছড়া ইউপি চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফ, শাপলাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক চৌধুরী,কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো: ওসমান গণি প্রমূখের নাম শোনা যাচ্ছে। সম্ভাব্য ৭ প্রার্থীর মধ্যে ৬জনই মহেশখালী উপজেলার।

এছাড়া জাতীয় পার্টির পক্ষেও আগামী সংসদ নির্বাচন ঘিরে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা শোনা যাচ্ছে কুতুবদিয়া-মহেশখালী আসনে। জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ন আহবায়ক মহেশখালীর মাহমুদুল করিম, জেলা যুগ্ন আহবায়ক ও কুতুবদিয়া উপজেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক সাবেক বড়ঘোপ ইউপি চেয়ারম্যান আ.ন.ম শহীদ উদ্দীন ছোটন, উপজেলার যুগ্ন আহবায়ক ও জেলা সদস্য মোহাম্মদ জাফর আলম সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় আছেন বলে উপজেলা জাপার সদস্য সচিব হাজী আব্দুল মোনাফ জানিয়েছেন।

কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ তাহের বলেন, বর্তমান সাংসদ সহ প্রবীণ ও নবীন অনেকেই নৌকার সম্ভাব্য প্রার্থী হতে লবিং করছেন। তবে একজন ভাল লোক, সরকারের উন্নয়ন এবং সর্বস্তরের মানুষের কাছে আশেক উল্লাহ রফিক এখন একজন পরীক্ষিত জনপ্রতিনিধি। তবে দলের হাই কমান্ড যাকেই দেবেন নৌকা, তারা তার জন্যই কাজ করবেন বলেও জানান তিনি।