পর্যটকে ঠাসা কক্সবাজার, প্রাণ ফিরেছে সবার মাঝে

মুহিবুল্লাহ মুহিব •

করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সাড়ে চার মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর গেল ১৯ আগস্ট থেকে খুলে দেয়া হয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের নগরী কক্সবাজার।

সৈকতের শহর এখন পর্যটকে ঠাসা। উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে শঙ্কা থাকলেও আশায় বুক বাঁধছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। পর্যটনের ওপর নির্ভর করে যারা নানাভাবে জীবিকা নির্বাহ করেন তারা বিগত দিনের ক্ষতি কাটিয়ে তোলার স্বপ্নে বিভোর। আর কোনো বিধিনিষেধ আরোপ না হলে আগামী কয়েক মাসে ক্ষতি অনেকটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট্য ব্যবসায়ীরা।

শনিবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সমুদ্র সৈকতের লাবণী, কলাতলী ও সুগন্ধা পয়েন্ট হাজার হাজার পর্যটকে ঠাসা। তারা বালিয়াড়িসহ সাগরের নোনাপানিতে আনন্দে মেতেছেন। কেউ ছবি তুলছেন, আবার কেউ সেলফিতে মেতে উঠেছেন। কেউ সমুদ্রের ঢেউয়ে পা ভেজাচ্ছেন, কেউবা সি-বেঞ্চে বসে আছেন আরাম করে। পরিবার-পরিজন নিয়ে এসেছেন অনেকে।

বিপুলসংখ্যক পর্যটকের আগমনে কর্মব্যস্ততা বেড়েছে সৈকত এলাকার ফটোগ্রাফার, জেড স্কি ও বিচ বাইক চালকদের। একই সঙ্গে জমজমাট ব্যবসা বার্মিজ মার্কেটগুলোতেও। ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়ে পণ্যের কেনাবেচায় সরগরম দোকানগুলো। এছাড়াও সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল মোটেল ও রিসোর্টগু ৫০ শতাংশ বুকিং হয়ে আছে। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন এ ধারা অব্যাহত থাকলে ক্ষতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে।

কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র আবু তালেব শাহ বলেন, আশা করছি মহামারি কাটিয়ে আমরা আবার নতুন করে শুরু করতে পেরেছি। আগামীতেও আরও ভালো ব্যবসা হবে বলে আশা করছি। যদি বিধিনিষেধের কবলে না পড়ি তাহলে ক্ষতি দ্রত কাটিয়ে উঠা সম্ভব।

কলাতলী মেরিনড্রাইভ হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার, ইনানীসহ কয়েকটি স্পটে বেশকিছু পর্যটক এসেছে। এ হিসাবটা মিলালে অনেকটা বোঝা যাবে কত পর্যটক কক্সবাজারে এসেছে করোনার পরে। সবচেয়ে আশার কথা হলো সকল বেকার কর্মচারী কাজ ফিরে পেয়েছে। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীরাও লোকসান কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনাকালীন সময়ে অবস্থার উত্তরণ হয়েছে অনেকটা। এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে চলমান অর্থনৈতিক চাকা আরও সচল হবে।

তবে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আবারো বৃদ্ধি পাওয়ায় সৈকত এলাকায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে কঠোর হচ্ছে প্রশাসন। করোনার চিন্তা মাথায় রেখে ব্যবসায়ীদেরকেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যাতে স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক পরিধানে বাধ্য করে।