বয়োবৃদ্ধ নুরুল আলমকে নির্যাতনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা -অতিরিক্ত পুলিশ সুপার

ইমাম খাইর, কক্সবাজার  ◑
কক্সবাজারের চকরিয়া ঢেমুশিয়া এলাকার বয়োবৃদ্ধ নুরুল আলম (৬৫) কে নির্যাতনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোঃ ইকবাল হোসাইন।

তিনি বলেন, সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি আমরা দেখেছি। এতে খুবই দুঃখজনক চিত্র ফুটে উঠেছে। একটি সভ্য সমাজে এমন আচরণ কোনভাবে প্রত্যাশিত নয়।

মোঃ ইকবাল হোসাইন দুঃখ করে বলেন, একজন বৃদ্ধ লোককে আরেকটা লোক অপমান-নির্যাতন করছে; আর সবাই চারিদিকে চেয়ে অাছে, এটা কেমন করে হতে পারে?

এদিকে, বৃদ্ধ নুরুল আলমকে বিবস্ত্র করে অমানবিক নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

গত ২৪ এপ্রিল বিকালে চকরিয়া উপজেলার ঢেমুশিয়ার ছয়কুড়িটিক্কা পাড়ার হায়দার বাপের দরগাহ এলাকায় আনছুর আলম নামের এক যুবকের নেতৃত্বে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটানো হয়। ওই ঘটনায় ছেলে অাশরাফ হোসাইন ৩১ এপ্রিল থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও তদন্তে সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে অভিযোগটি।

ভিডিওতে দেখা যায়, ওই বৃদ্ধকে লুঙ্গি খুলে দিয়ে শার্ট ছিঁড়ে দেয়া হয়। একই সময় ওই বৃদ্ধকে কিল-ঘুষি মেরে নির্যাতন চালানো হয়। আর কয়েকজন যুবক তা মোবাইলের ক্যামরায় ধারণ কর। তবে এসময় কেউ ওই বৃদ্ধকে বাঁচাতে এগিয়ে যায়নি।

এই ঘটনায় দায়ের করা এজাহারে আসামী করা হয়েছে- ওই এলাকার মৃত মনির উল্লাহর ছেলে বদিউল আলম (৫৫), আনছুর আলম (৩৫),শাহ আলম (৫২), শাহ আলমের স্ত্রী আরেজ খাতুন (৪৮), বদিউল আলমের ছেলে মিজানুর রহমান (২৮), আবদুল জাব্বারের ছেলে রিয়াজ উদ্দিন (৩২), জয়নাল আবেদিন (৩০) এবং মনজুর আলমের ছেলে মো.রুবেল (২৮)।

ছেলে অাশরাফ হোসাইন বলেন, গত ২৪ এপ্রিল আমার বয়োবৃদ্ধ পিতা নুরুল আলম ঈদের বাজার করে ঢেমুশিয়া স্টেশন থেকে টমটম গাড়িতে করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে আনছুর আলমের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী টমটম থেকে আমার বাবাকে নামিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে পড়নে থাকা লুঙ্গি, গেঞ্জি ছিড়ে ফেলে। মারধর ও অসভ্য গালিগালাজও করে। কয়েকজন যুবক এসব ঘটনার মোবাইলের ক্যামরাতে ধারণ করে। এসময় আমার বাবা বাঁচাও বাঁচাও বলে শোরচিৎকার করতে থাকে। পরে ঘটনাটি শোনার পর আমার ছোট ভাই সিএনজি চালক সালাহউদ্দিন স্থানীয় লোকজনসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে আমার বাবাকে উদ্ধার করে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে চিকিৎসা করায়।

তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমার বাবার ব্যবহৃত একটি মোবাইল সেট ও পকেটে থাকা নগদ সাড়ে সাত হাজার টাকাও ছিনিয়ে নেয়। তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে আমার বাবার উপর অমানবিক এই ঘটনার পুরো নেতৃত্ব দেয় সন্ত্রাসী আনছুর আলম। সে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। এমন কোন অপকর্ম নেই যা সে করেনা। আমরা এ ঘটনার সুষ্ট বিচার দাবি করছি।