স্ত্রী-কন্যা ছেড়ে সহকর্মীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক – প্রান্তিক এনজিওর দুর্নীতিগ্রস্থ কর্তার কান্ড!

নিজস্ব প্রতিবেদক :

” আমার লাইফটা নষ্ট করেছে, আমার মেয়ের লাইফটাও নষ্ট করেছে সে ” কান্না জড়িত কন্ঠে নিজের স্বামীকে নিয়ে এভাবেই বলছিলেন ময়মনসিংহের ২৫ বছর বয়সী এক নারী।

ঐ নারীর অভিযোগ, বিবাহ বিচ্ছেদ ছাড়াই এক সহকর্মীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে গত দুইবছর ধরে যোগাযোগ করছেন না তাঁর স্বামী আব্দুল্লাহ আল আবির।

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা এলাকার আব্দুল কাদেরের পুত্র আবির উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এনজিও প্রান্তিক উন্নয়ন সোসাইটির স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের ক্লিনিক ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন।

২০২২ সালে আবির প্রতিষ্ঠানটিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর সেখানকার মিডওয়াইফ হিসেবে কর্মরত সীমা রহমানের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বলে জানান তার স্ত্রী।

স্ত্রীর ভাষ্যমতে তারা ২০১৭ সালে বিয়ে করেন, তাদের ঘরে ৫ বছর বয়সী এক কন্যা রয়েছে।  উখিয়ায় চাকরিতে আসার পর আবির হঠাৎ করেই যোগাযোগ কমাতে শুরু করেন তার সাথে পরে তিনি জানতে পারেন স্বামীর দ্বিতীয় সম্পর্কের কথা।  ফলে আবির ক্ষিপ্ত হয়ে ডিভোর্স কিংবা কোনো প্রকারের সমাধান ছাড়াই তার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রেখেছেন ,নিচ্ছেন না পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব।

কন্যাকে নিয়ে বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করা ঐ নারী জানান, ” ভালোবেসে আবিরকে বিয়ে করেছিলাম, আমি তার পরিবারের কাছে দারস্থ হয়েছি স্ত্রীর প্রাপ্য মর্যাদা পেতে তারাও আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে। গাজীপুরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে মেয়েকে নিয়ে কোন রকম বেঁচে আছি।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবিরের এক সহকর্মী জানান, ” আমরা জানি সীমা ও তার বিয়ে হয়েছে, তবে কিভাবে প্রথম স্ত্রীর অমতে সে বিয়ে করলো জানিনা। কিন্তু এটা ঠিক তারা লিভ টু গেদারে আছে। ”

অন্যদিকে ইমরান হোসাইন নামে একজনকে ২০১৯ সালে বিয়ে করেছিলেন সীমা, গতবছর আবিরের সাথে সম্পর্কের জেরে তাদের বিচ্ছেদ হয়।

বিয়ের আগে থেকেই সীমার সাথে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন ইমরান। ১৫ বছর ধরে চলতে থাকা সম্পর্ক শেষ করেছেন উল্লেখ করে তিনি জানান, ” এসব নিয়ে আর ভাবতে চাই না, আল্লাহ যা করেন ভালো করেন এবং ওর বিচার তিনিই করবেন। ”

স্বামীর কর্মস্থল প্রান্তিকের নির্বাহী পরিচালক আ ফ ম রেজাউল করিম কে বিষয়টি অবগত করেছিলেন আবিরের স্ত্রী। প্রতিকার পাওয়া তো দূরের কথা উলটো ঐ কর্মকর্তা তাকে শাসিয়েছিলেন বলে জানান তিনি।

আবিরের স্ত্রী বলেন, ” প্রান্তিকের মালিক আমাকে বলেছেন তাকে ফোন দেওয়ার সাহস কি করে পেলাম। তিনি আমাকে গালমন্দ করেন। ঐ সময় যদি তার অফিস ব্যবস্থা নিতো আজকে আমার পরিণতি এমন হত না।”

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে শুধু নারী কেলেংকারীই  নয় – দাতা সংস্থার সামগ্রী বিক্রি, অনুদানের ওষুধ নয়ছয় সহ বিতর্কিত এনজিও হিসেবে পরিচিত প্রান্তিকের উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশে ঐ সংস্থার স্বাস্থ্য প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতিতে জড়িত আবির।

এসব নিয়ে প্রতিবাদ করায় সংস্থাটি থেকে চাকরি খোঁয়াতে হয়েছে অনেককেই, যাদের মধ্যে তিনজনের তথ্য পাওয়া গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাদেরই একজন আবিরের প্রাক্তন সহকর্মী বলেন, ” সংস্থার অসাধু ব্যবস্থাপনার কারণে অনৈতিক কর্মকান্ড চালানোর সুযোগ পেয়েছে সে। দাতা সংস্থার প্রদান করা সোলার লাইট, ঔষধ সহ বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী কৌশলে সে বিক্রি করেছে এবং তার উর্ধতনদের সাথে অর্থ বন্টন করেছে। এসব নিয়ে প্রতিবাদ করায় আমি চাকরি হারিয়েছি।”

আবিরের কুকীর্তির নেপথ্যে যে তার সংস্থার মদদ রয়েছে সেটির প্রমাণ মিলেছে খোদ আবিরের বক্তব্যেই।  অভিযোগ প্রসঙ্গে নিজের সব অপকর্মের দায় কর্মস্থলকে চাপিয়ে দিতে তিনি বলেন, ” আপনার আমার অফিসকে বলেন, এসব প্রশ্নের উত্তর অফিস দিবে আমি নই।”

এসব বিষয়ে মুঠোফোনে প্রান্তিকের নির্বাহী পরিচালকের কাছে জানতে চাইলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।