রোহিঙ্গার হাতে এনআইডি: প্রশাসনকে উপেক্ষা করে জমকালো আয়োজনে বিয়েও করলেন বাংলাদেশীকে!

এম ফেরদৌস ( উখিয়া কক্সবাজার :

  • * ডকুমেন্টস ছাড়াই মোটা অংকের টাকায় মিলছে রোহিঙ্গাদের এনআইডি

  • * জড়িত নির্বাচন কর্মকর্তাসহ দালাল চক্র

  • * আবার তারা ভিন্ন দেশের পাসপোর্টধারী নাগরিক

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রতারক চক্রের সহায়তায় জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে বাংলাদেশের নাগরিক হয়েছেন কুতুপালং ক্যাম্পের মোঃ শফির ছেলে মোহাম্মদ জুহার।

সে চট্রগ্রাম থেকেই কৌশলে বানিয়ে নেন এনআইডি যার আইডি নং – ১৯৯৭১৫৯৫৭০৮০০০৪২৬ তার জন্মসাল ১৭ আগস্ট ১৯৯৭ ইং।
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ২০১৮ সালে জুহার এবং তার পরিবার অবৈধপথে কানাডায় পাড়ি জমায় । সেখানে রোহিঙ্গা জুহার কৌশলে করে নেন কানাডিয়ান পাসপোর্ট। যার পাসপোর্ট নং – A S 436366 / QR CODE >> E N C 44909 প্রকৃতপক্ষে জুহার রোহিঙ্গা নাগরিক। কিন্ত অবৈধভাবে বাংলাদেশে করেছে জাতীয় পরিচয়পত্র অন্যদিকে পাসপোর্ট করেছেন কানাডিয়ান।

এ অনুসন্ধানে আরও উঠে এসেছে, মাসখানেক আগে জুহার কানাডা থেকে কুতুপালং ক্যাম্পে তার আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে অবস্থান করেন। সেখান থেকে তিনি উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের পান্যাশিয়া এলাকা থেকে বাংলাদেশি এক যুবতিকে রাজকীয়ভাবে বিবাহ করেন।

এ ঘটনা জানাজানি হলে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর হোসেন বিবাহ বন্ধের নির্দেশ দেন। পরে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির জিম্মায় অঙ্গীকারনানা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আল মাহমুদ জানান, রোহিঙ্গা এবং স্থানীয়দের মধ্যে বিবাহের খবর পেয়ে তৎখনাৎ ঘটনাস্থলে পৌছি। প্রাথমিকভাবে মেয়ের বাবাকে নিষেধ করা হয়। রোহিঙ্গা ছেলের বিষয়ে খোজখবর নিতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির জিম্মায় প্রাথমিকভাবে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

স্থানীয়রা জানায়, যেখানে বাংলাদেশী একজন নাগরিক ভোটার হতে ১৫/২০ টি পর্যন্ত কাগজ লাগে। সেখানে পিতা মাতাসহ পূর্বপুরুষের আইডি, ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক বিভিন্ন সনদ ইত্যাদি। আর এদিকে রোহিঙ্গাদের এসব তো দুরের কথা কোন ডকুমেন্টস ছাড়াই তারা জাতীয়পরিচয়পত্র পেয়ে যাচ্ছে।

এ নিয়ে চট্রগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামানের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

সুশীল সমাজের দাবি, বাংলাদেশে এনআইডি করার অপরাধে এনআইডি জালিয়াতির আইন অনুযায়ী দেশের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা হউক রোহিঙ্গা জুহারকে। নয়তো রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এরকম আরো বড় ধরণের অপরাধ করে বেড়াবে।

এদিকে ঢাকাস্থ কানাডিয়ান এম্বাসি কর্মকর্তা বরাবর এন আইডি জালিয়াতির অপরাধে তার কানাডিয়ান পাসপোর্ট ভিসার টিকেট বাতিল করার জন্য অভিযোগপত্র পাঠিয়েছেন এক সুশীল ব্যক্তি।

অন্যদিকে, বিয়ের দিন দুপুরে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আল মাহমুদ বিয়ে বন্ধ করে দিয়ে আসলেও একইদিন রাতে আবার কিভাবে বিয়ে হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ।

তারা জানান, প্রশাসন যেখানে উপস্থিত হয়ে বিয়ে বন্ধ করেছেন সেখানে আবার প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে বিয়ে হয়েছে তা আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে।

তারা আরও জানান, সেদিন রাতে বিষয়টি সমাজসেবা কর্মকর্তাকে অবহিত করার জন্য পূনরায় ফোন করা হলেও রহস্যজনক কারণে ওই সময়ে তার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।