২০১২ সালের জামায়াত শিবিরের বর্বরতা এখনো ভুলিনি

আবুল মনছুর

২০১১সালে যখন ইন্টারে ভর্তি হলাম চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ তখন থেকে আমার রাজনীতি শুরু উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ নোমান ভাইয়ের হাত ধরে।

তখন তিনি চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজে মার্স্টাস করতেন আর আমি ইন্টারমিডিয়েট ভর্তি হয়েছিলাম। নোমান ভাই চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি সিনিয়র নেতৃবৃন্দর সাথে পরিচয় করিয়ে দেন এবং আমাকে দেখার অনুরোধ জানান সিনিয়র নেতৃবৃন্দদের বিশেষ করে তাহের ভাই,রাজন ভাই,জাকারিয়া ভাই,আবদুল আহাদ ভাইসহ আরও অনেকের সাথে।

যেহেতু নোমান ভাই সাংগঠনিক কাজে প্রায় সময় উখিয়া উপজেলায় থাকতেন সেই কারণে ওনার সাথে রাজনৈতিক কার্যক্রমে খুব কম অংশগ্রহণ করা হয়েছিল তবে শিবির ধরিয়ে দিতে অনেকবার চট্টগ্রাম পাঁচলাইশ থানায় গিয়েছিলাম এক সাথে দুজনে।

কলেজ রাজনীতি শুরু করি আবদুল আহাদ ভাইয়ের সাথে। তিনি বর্তমান চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ’র উপ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক পদে দায়িত্বে আছেন।আহাদ ভাইয়ের সাথে কলেজ রাজনীতিতে নিয়মিত হয় প্রত্যেকটি মিটিং মিছিল প্রোগ্রামে।।কক্সবাজারের ছেলে হিসেবে সবাই চিনতেন আমাকে এবং খুব আদরও করতেন।

আমি এক বন্ধুর মাধ্যমে যে বাসায় ওঠি ওটা ছিল বাদামতল,নতুন চাঁদগাঁও থানা, চট্টগ্রাম। সেখানের আশেপাশে প্রায় জামাত শিবির ছিল। তারা জানতো আমি ছাত্রলীগ করি চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ শাখায় এবং প্রায় সময় আমাকে ফলোআপ এ রাখতো।এতো ছাত্রলীগ নেতা কর্মী তখন ছিল না।

২০১২ সালে এসে একদিন আমাকে হামলা করে জামাত শিবিরের বাহিনী।মারধর করে আমার অর্ধেক জিব্বাহ কেটে দেয় এবং রুমের দরজা বন্ধ করে পালিয়ে যায়।আশেপাশের লোকজন এসে দরজা খুলে দেয়।তাৎক্ষণিক আমি সৈয়দ মোহাম্মদ নোমান ভাইকে ফোন দি।

তিনি তখন বাদুরতলায় থাকতেন।তিনি এসে আমাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং ডাক্তার দেখান। ডাক্তার ইনজেকশন দিয়ে জিব্বাহ সাত সেলাই করে দেয় এবং নোমান ভাই ওষুধপত্র নিয়ে তার বাসায় নিয়ে যায় বাদুরতলায়। সম্পূর্ণ চিকিৎসা ভাল না হওয়া পর্যন্ত প্রায় ১ মাস তার বাসায় রাখে,পরে আমি তার বাসায় স্থানীভাবে থেকে যায়। দীর্ঘ কয়েক মাস পর সুস্থ হলাম।

পরবর্তীতে নোমান ভাই উখিয়ায় চলে আসার পর কলেজ রাজনীতির পাশাপাশি থানা ভিত্তিক রাজনীতিও শুরু করি,পাঁচলাইশ থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সৌরভ চৌধুরী ভাইয়ের সাথে। কলেজ রাজনীতির পাশাপাশি সৌরভ ভাইয়ের নেতৃত্বে প্রতিটা মিটিং মিছিলে নিয়মিত হয় পাঁচলাইশ থানা ছাত্রলীগে। ২০১১ সাল থেকে ২০১৯ সাল অবধি রাজনীতিতে সক্রিয় আছি এবং থাকবো।

২০১২ সালের জামাত শিবিরের বর্বরোচিত হামলার কথা আজও ভুলিনি নিজের ঘটে যাওয়া ঘটনা।।আমার আর এক অভিভাবক কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কর্মী বান্ধব জনপ্রিয় ছাত্রনেতা মোরশেদ হোসেন তানিম ভাইয়ের দেওয়া দায়িত্ব নিয়ে কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ পরিবারের সাথে আছি বর্তমানে।

খুব দুঃখ হয় এতো কিছু বলার কারণ ২-৩বছর হতে রাজনীতিতে আসা সুসময়ের কোকিলদের কথাবার্তা শোনলে মনে হয় যেন আমি তাদের কর্মী।আমরা ছাত্রলীগের কেউ ছিলাম না, তারাই যেন দুঃসময়ে সঙ্গী! আজ রাজনীতির হাওয়া বইছে প্রতিটি ঘরে ঘরে রাজনীতির বন্যা,ছাত্রলীগের বন্যা। স্কুল কলেজ লাইফে শিবির করা বন্ধুগুলোও আজ ছাত্রলীগের বড় পোস্ট দারি। দোষটা তাদের নয় আমাদের নেতাদের কারণ কে কোন দল থেকে এসেছে আমাদের দেখার বিষয় নয়,গ্রুপ ভারি করা মূখ্য বিষয়।

একদিন হয়তো সত্যিকারের দুঃসময়ের রাজনৈতিক কর্মী গুলো হারিয়ে যাবে সুসময়ের নেতাদের ভিড়ে। তারপরও শুভ কামনা সকলের জন্য।

আবুল মনছুর
• সহ-সভাপতি (বাংলাদেশ ছাত্রলীগ)
কক্সবাজার সরকারি কলেজ শাখা
• সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী
ছাত্রসংসদ চট্রগ্রাম সরকারি সিটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা