আটকের ১৬ দিন পর মিয়ানমার কারাগার থেকে সেই ৯ জেলেকে স্বদেশে ফেরত এনেছে বিজিবি!

গিয়াস উদ্দিন ভুলু,কক্সবাজার জার্নাল •


দীর্ঘ ১৬ দিন আগে নাফনদী সংলগ্ন সাগরের মোহনা থেকে একটি ফিশিং ট্রলারসহ আটক করে নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশী ৯ জেলেকে স্বদেশে ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছে টেকনাফ ২ বিজিবি।

সূত্রে জানাযায়,২৫ নভেম্বর (বুধবার) সকাল ১০টার দিকে টেকনাফ ২ বিজিবিতে দায়িত্বরত অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান (পিএসসি) নেতৃত্বে, ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল টেকনাফ পৌরসভা জালিয়া পাড়া এলাকা সংলগ্ন টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রানজিট ঘাট দিয়ে থেকে মিয়ানমারের মংডুর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। সেখানে পৌছে দুই দেশের মধ্যে অনুষ্টিত সৌহার্দ্যপুর্ণ পতাকা বৈঠকে মিলিত হয়। দীর্ঘ ২ ঘন্টার পতাকা বৈঠক শেষে মিয়ানমারে কারাগারে আটক থাকা বাংলাদেশী ৯ জেলেকে বিজিবির হাতে হস্তান্তর করে বিজিপি। এরপর একই দিন দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের সময় টেকনাফ জেটি ঘাটে পৌঁছতে সক্ষম হয়।

স্বদেশে ফেরত আসা ৯ জেলেরা হচ্ছে, টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়ন শাহপরীরদ্বীপ ঘোলাপাড়া এলাকার মৃত গোলাম হোসেন’র পুত্র মোঃ নুরুল আলম(৪৮), সৈয়দ হোসেন’র পুত্র ইসমাইল প্রকাশ হোসেন(১৯), আব্দুস সালাম’র পুত্র মোঃ ইলিয়াছ(২১), মোহাম্মদ জাকারিয়ার পুত্র মোঃ ইউনুছ(১৬), সৈয়দুর রহমান প্রকাশ বুলু মাঝির পুত্র মোঃ আলম প্রকাশ কালু(১১), ছলিম উল্লাহ’র পুত্র সাইফুল(১৭), মৃত বশির আহাম্মদ’র পুত্র সলিম উল্লাহ(২৫), মৃত শাহ আলম’র পুত্র নুর কামাল(১৩), মৃত রহিম উল্লাহ’র পুত্র মোঃ লালু মিয়া(২৩)।

এদিকে জেটি ঘাটে পৌঁছার পর করোনা ভাইরাস থেকে সবাইকে মুক্ত রাখার জন্য তাদের সকলের স্বাস্থ্য পরিক্ষা করা হয় এবং ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়।

২ বিজিবি অধিনায়ক সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সংবাদ কর্মিদের জানান মিয়ানমার মংডু ১নং এন্ট্রি/এক্সিট পয়েন্টে সকাল ১১টার দিকে দুই দেশের পতাকা বৈঠকে মিয়ানমার ৪নং বিজিপির কর্মরত কমান্ডার জ-লিং-আং এর নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি দল অংশ গ্রহন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি স্থানীয় সংবাদকর্মিদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে আরো বলেন ৯ জেলে আটক হওয়ার পর থেকে তাদেরকে স্বদেশে ফেরত আনার জন্য বাংলাদেশের পক্ষে টেকনাফ ২ বিজিবি’র জোরালা তৎপরতা রাখার প্রেক্ষিতে মিয়ানমার বিজিপি তাদেরকে দ্রুত সময়ের মধ্যে হস্তান্তর করতে সম্মত হয়।

দুই দেশের সীমান্ত রক্ষিদের মধ্যে সব সময় সৌহার্দ্যপুর্ণ পরিবেশ এবং মাদক পাচার ঠেকাতে খুব শীগ্রই নাফনদীতে পুণরায় বিজিবি-বিজিপি যৌথ টহল চালু করা হবে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত ৭ নভেম্বর (শনিবার) নাফনদীতে মাছ শিকার করতে গিয়ে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বিজিপির ছোঁড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মোঃ ইসলাম নামে বাংলাদেশী এক জেলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা গিয়েছিল। উক্ত ঘটনার জবাব চেয়ে টেকনাফ ২ বিজিবি মিয়ানমার বিজিপির কাছে একটি প্রতিবাদলিপি প্রেরন করে।

এরপর ১০ নভেম্বর(মঙ্গলবার) নাফনদী সংলগ্ন সাগরের মোহনা থেকে একটি ফিশিং ট্রলারসহ বাংলাদেশী ৯ জেলেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল মিয়ানমার বিজিপি।