ঈদগাঁওতে বাস-বাইকের সংঘর্ষে দাখিলে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী নিহতঃ ৩ স্কুল ছাত্র আহত; বাসে আগুন

শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, সদর

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ঈদগাঁও কলেজ গেইট এলাকায় হানিফ পরিবহনের একটি বাস ও মোটর বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এ সময় আসিফ কামাল ইমরান নামের এক যুবক নিহত হয়েছে।

নিহত ইমরান ঈদগাঁও কালির ছড়া এলাকার আবু তাহেরের ছেলে বলে জানা গেছে। এবং ঈদগাঁও শাহ জব্বারিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে সদ্য ঘোষিত দাখিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। ঘটনায় মোটর সাইকেলের আরো তিন আরোহী গুরুতর আহত হয়েছে।

মুমূর্ষু অবস্থায় একজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আরেক জনকে ডুলহাজারা মেমোরিয়াল খ্রিস্টান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর একজন প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরে গেছে।

আহতরা হল ঈদগাঁও কলির ছড়া এলাকার নুরুর ছেলে শামীম(১৮), শামশু আলমের ছেলে রাহুল (১৮), আলমের ছেলে জয়নাল (১৮)।তাদের মধ্যে শামীম ও রাহুলের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে। আহতের মধ্যে তিনজনই ঈদগাহ আদর্শ শিক্ষা নিকেতন কেজি স্কুলের ছাত্র বলে জানা যায় । সংঘটিত এ দূর্ঘটনায় সহপাঠীদের আহতের সংবাদে হানিফ পরিবহনের বাসে আগুন দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

বাসস্ট্যান্ডে সড়কে টায়ার জালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে কেজি স্কুলের শিক্ষার্থীরা।

ঈদগাঁও পুলিশের একদল ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। (০৭ মে) মঙ্গলবার সকাল আনুমানিক ১০ টার দিকে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে আরকান সড়কের কলেজ গেইটের দক্ষিণ পাশে।

সরেজমিনে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা যায় , চট্টগ্রাম মুখী হানিফ পরিবহনের একটি বাস যার (নং চট্রমেট্রো-ব-১১-০২৪৩) ঘটনাস্থলে পৌছলে কালির ছড়া মুখি একটি পালসার কালো রং এর বাইক একই স্থানে পৌছলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হানিফ পরিবহনের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ লেগে যায়। এক পর্যায়ে বাইকটি বাসের নিচে চাপা পড়ে লেগে থাকে। স্থানীয়রা দ্রুত এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে পাশ্ববর্তী বাসস্ট্যান্ডস্থ একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইমরানকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর শামীম ও রাহুলকে অন্যত্রে প্রেরণ করেন এবং জয়নালকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এ দিকে সহপাঠীদের আহতের সংবাদে স্কুলে উপস্থিত অপরাপর শিক্ষার্থীরা সড়কে টায়ার জালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং কলেজ গেইট এলাকায় গিয়ে হানিফ পরিবহনের বাসে আগুন লাগিয়ে দেয়। সে সময় সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হলে উভয় পাশ থেকে আসা যানবাহন আটকা পড়ে।

পরে খবর পেয়ে ঈদগাঁও তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ আসাদুজ্জামানের নির্দেশে এসআই সনজিত চন্দ্র নাথ,লিটনুর রহমান জয়ের নেতৃত্বে একদল ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘন্টা খানেক পর রামু তুলা বাগান হাইওয়ে পুলিশের একটি দল এসে লোক দেখানো যানজট নিরসনের নামে উৎসুক জনতার উপর লাঠি চার্জ করতে দেখা গেছে।

বাসটি তাদের হেফাজতে নিয়ে যায় বলে জানান হাইওয়ে পুলিশের এসআই জামাল।

অন্যদিকে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় বাসে আগুন দিয়ে জালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেছে স্থানীয় পরিবহন সংগঠনের নেতারা। তারা জানান,সড়কে দুর্ঘটনা হবে এটা স্বাভাবিক,ঘটনায় মৃত্যু হলে স্বজনদের যেমন মায়া লাগে তার চেয়ে আমাদের আরো বেশি মায়া লাগে।

হতাহতদের চিকিৎসা না দিয়ে বাসে আগুন দিয়ে জালিয়ে দেওয়া দন্ডনীয় অপরাধ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ আসাদুজ্জামান বে-বেঙ্গল নিউজকে বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এবং উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

ঈদগাহ্ আদর্শ শিক্ষা নিকেতন কেজি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ শহিদুল হকের মোবাইলে সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ রিপোর্ট তৈরি করা পর্যন্ত নিহত হতাহতদের এলাকায় শোকের ছায়া বিরাজ করছে। স্বজনদের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।