কোনভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না ইয়াবা পাচার

সময় নিউজ ◑
নানা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েও টেকনাফ দিয়ে ইয়াবা পাচার বন্ধ করা যাচ্ছে না। প্রতিদিনই জব্দ হচ্ছে লাখ লাখ পিস ইয়াবা। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সীমান্তে ইয়াবার কারখানা গড়ে তোলায় তা প্রতিরোধ এক প্রকার অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়নের পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে।

গত এক মাসে শুধুমাত্র মিয়ানমার সীমান্তবর্তী কক্সবাজার জেলা থেকে র্র্যাব এবং বিজিবির অভিযানে জব্দ হয়েছে ২৫ লাখের বেশি ইয়াবা। এর মধ্যে ২৪ আগস্ট র‌্যাবের এক অভিযানেই ১৩ লাখ পিস ইয়াবা জব্দ হয়। মিয়ানমার থেকে এই ইয়াবার অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে গিয়ে বাংলাদেশে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেও হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করে নিচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
কক্সবাজার প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, সীমান্তের ওপারে যে কারখানাগুলো গড়ে উঠেছে। যদি সে কারখানাগুলো বন্ধ করা না হয়, তাহলে পাচার বন্ধ সম্ভব হবে না। তবে পাচার রোধে কিছু উপায় বের করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের ২৮০ কিলোমিটার সীমান্তের মধ্যে সীমান্তবর্তী জেলা রয়েছে কক্সবাজার, বান্দরবান ও রাঙামাটি।

মূলত বঙ্গোপসাগর এবং নাফ নদীর পাশাপাশি টেকনাফ সীমান্ত দিয়েই মিয়ানমার থেকে ইয়াবা ঢুকছে বাংলাদেশে। কয়েক মাস আগেও ইয়াবা বিরোধী অভিযানে পুলিশ বড় ধরনের ভূমিকা রাখলেও ৩১ জুলাই রাতে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার পর বন্ধ হয়ে গেছে পুলিশী তৎপরতা।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন বলেন, বিশেষ কোন পরিস্থিতি আমাদের চোখে পড়েনি। কারণ এরকম হলে তো আমরা দেখতাম। আর নিয়মিত আমাদের যে ঘটনাগুলো ঘটে অন্যান্য সময়ের মতো আমরা তা স্বাভাবিকই দেখতে পাচ্ছি।

এ অবস্থায় ইয়াবার পাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশের সীমান্তকে আধুনিকায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, বিজিবিকে বলেছি, আমাদের কাছে একটা পরিকল্পনা দেয়ার জন্য। যারা আধুনিকায়নের কাজগুলো করবে তাদের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তবে শুধুমাত্র সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করে ইয়াবার পাচার রোধ করা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর অব. এমদাদুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক মাদক নিয়ন্ত্রণের যে সংস্থাগুলো আছে। তাদের সঙ্গে আমাদের একটা কার্যকরী ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। তাদের মাধ্যমে আমরা মিয়ানমারকে চাপ দিতে পারবো।

বছরে ইয়াবা আনার বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে ৯ হাজার কোটি টাকার বেশি মিয়ানমারে পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।