মরনোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হলেন কক্সবাজারের গর্ব শহিদ এ.টি.এম জাফর আলম

আবদুল্লাহ আল আজিজ, কক্সবাজার জার্নাল ডটকম :

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদ এটিএম জাফর আলমের মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার গ্রহণ করেছেন তারই আপন ছোট ভাই উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ৩নং হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহ আলম।

জাতীয় পর্যায়ে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১২ ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে মহান স্বাধীনতা পদক তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ সোমবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে গৌরবময় ও অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী এই সম্মাননা পদক তুলে দেন।

কক্সবাজারের শহীদ এটিএম জাফর আলম (মরণোত্তর) এই স্বাধীনতা পুরুস্কার পেয়েছেন। বাঙালির জাতিপুত্র আবু তাহের মোহাম্মদ জাফর আলম ১৯৪৭ সালের ৫ মে কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার রুমখাঁ পালং গ্রামে পিতা সৈয়দ হোসাইন মাস্টার ও মাতা আলমাছ খাতুনের ঘরে জন্ম গ্রহণ করেন। সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে একাত্তরের পঁচিশে মার্চের কালো রাতে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন মেধাবী সন্তান এটিএম জাফর আলম। বাঙালির জাতিপুত্র জাফর আলম মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদদের অন্যতম।

শহীদ এটিএম জাফর আলমের এই মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে ক্রেস গ্রহণ করেন তারই আপন ছোট ভাই উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ৩নং হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহ আলম।

স্বাধীনতা পদকে ভূষিত অন্যান্য ব্যক্তিরা হলেন- শহীদ বুদ্ধিজীবী মোফাজ্জ্বল হায়দার চৌধুরী (মরণোত্তর), , মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ড. কাজী মিসবাহুন নাহার, আব্দুল খালেক (মরণোত্তর) ও অধ্যাপক মোহাম্মাদ খালেদ (মরণোত্তর), শওকত আলী খান (মরণোত্তর), চিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নুরুন্নাহার ফাতেমা বেগম, সমাজ সেবায় ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমেদ, সংস্কৃতিতে মুর্তজা বশীর, সাহিত্যে হাসান আজিজুল হক, গবেষণা ও প্রশিক্ষণে অধ্যাপক ড. হাসিনা খাঁন।

এছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব এগ্রিকালচার (বিআইএনএ) স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হয়।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম। এ সময় তিনি পদকে ভূষিত ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী ও তাদের অবদান বর্ণনা করেন।

পদক প্রাপ্ত সবাইকে ১৮ কেরেটের ৫০ গ্রাম সোনার মেডেল, ৩ লাখ টাকা ও একটি সনদ প্রদান করা হয়।

বর্তমান মন্ত্রীপরিষদ সচিব মোঃ শফিউল আলমের বড় ভাই স্বাধীনতা পুরুস্কার ২০১৯ প্রাপ্ত শহীদ এ.টি.এম জাফর আলম উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের রুমখাঁ পালং গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। এ.টি.এম জাফর আলম সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে দুর্লভ এই চাকুরীতে যোগদানের নিয়োগ পত্র পান। কিন্তু সিএসপি অফিসার হিসাবে যোগ দেয়ার আগে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর হাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রাবাসে এ.টি.এম জাফর আলম শহীদ হন। অত্যন্ত মেধাবী শহীদ এ.টি.এম জাফর আলমের নামে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের নামকরণ ও রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের ধেছুয়া পালং এ শহীদ এ.টি.এম জাফর আলম মাল্টিপারপাস ইনষ্টিটিউট গড়ে তোলা হয়েছে।

শহীদ এ.টি.এম শহীদ জাফর আলমই একমাত্র ব্যক্তি যিনি মরনোত্তর কক্সবাজার জেলায় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মানজনক স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত হলেন। এরআগে কক্সবাজার জেলায় তিনজন বিশিষ্ট ব্যক্তি একুশে পদক পেয়েছিলেন। তাঁরা হলেন-কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালীর বাসিন্দা, বাংলা একাডেমীর সাবেক পরিচালক, জাতিসত্তার কবি নুরুল হুদা, রামু উপজেলার মেরুংলোয়া সীমা বিহারের অধ্যক্ষ সত্যপ্রিয় মহাথেরো এবং মংচেন চিং মংচিন রাখাইন। তাঁরা সকলে জীবদ্দশায় একুশে পদক পেয়েছিলেন।