রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরাতেই সংঘাতে যাইনি : প্রধানমন্ত্রী , হেগের কাঠগড়ায় সু চি

ডেস্ক রিপোর্ট ◑ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিপীড়নের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরাতে আলোচনা চলছে। আমরা কিন্তু এ ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে কোন সংঘাতে যাইনি বরং দেশটির সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছি। যাতে মিয়ানমার সরকার তাদের নাগরিকদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

বিশ্ব মানবাধিকার দিবস-২০১৯ উপলক্ষে মঙ্গলবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা ইস্যুতে এ কথা বলেন।
এ প্রসঙ্গে তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানার উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে রোহিঙ্গারা আমাদের দেশে প্রবেশের চেষ্টা করলো, তখন শেখ রেহানা আমাকে বললো- ‘১৬ কোটি জনগণকে খাওয়াতে পারলে এই ১০/১১ লাখ অসহায় লোককে খাওয়াতে পারবে না?’ তাঁর এই কথা শোনার পর আমরা রোহিঙ্গাদের দেশে আশ্রয় দিয়েছি কিন্তু শুধুমাত্র মানবিক কারণে। কারণ মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের দেশের প্রায় এক কোটি শরণার্থীরা ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। স্বাধীনতার পর আমরা তাদের ফিরিয়ে এনেছি। মিয়ানমার কিন্তু তা করছে না।

কাঠগড়ায় সু চি

‘মিয়ানমারকে এই অহেতুক হত্যাযজ্ঞ থামাতে বলুন। থামাতে বলুন এই বর্বর কাণ্ড, যা আমাদের সবার বিবেককে অব্যাহতভাবে শোকাচ্ছন্ন করছে। (মিয়ানমারকে) নিজ জনগণের ওপর গণহত্যা থামাতে বলুন।’

নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) বিচারকদের উদ্দেশে মঙ্গলবার আবেগতাড়িত এ বক্তব্য দিচ্ছিলেন গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী আবুবকর তাম্বাদু। রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানির শুরুতেই তিনি এ আবেদন পেশ করেন। এ সময় সেখানে গণহত্যার দোসর হিসেবে হালে পরিচিতি পাওয়া মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চিও উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ব আদালত (ওয়ার্ল্ড কোর্ট) হিসেবে পরিচিত আইসিজেতে তিনি তার দেশের আইনজীবীদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

সু চি যখন হেগে আইসিজের কার্যালয় পিস প্যালেস বা শান্তি প্রাসাদে প্রবেশ করেন, তখন স্বাভাবিক শরীরী ভঙ্গিতেই ছিলেন। তার খোঁপায় ছিল তাজা ফুল। তবে আদালতে শুনানি শুরু হলে দ্রুতই তার চেহারা বদলে যেতে থাকে। একপর্যায়ে তাকে চরম বিষণ্ণ দেখা যায়। আদালতে পাথরের মতো বসে ছিলেন ৭৪ বছর বয়সী সু চি।

মানবাধিকার রক্ষার আন্দোলনের জন্য ২৮ বছর আগে এই দিনেই নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন সু চি। অথচ ভাগ্যের পরিহাস হলো এদিন তাকে শুনতে হলো ‘গণহত্যা বন্ধ কর’। গাম্বিয়ার আইনজীবীরা রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা ও গণধর্ষণের ভয়াবহ বর্ণনা তুলে ধরেন তার সামনেই। আদালতে আইনি লড়াইয়ের জন্য দুই দেশই খ্যাতনামা আইনজীবীদের নিয়োগ দিয়েছে।

যুক্তরাজ্যে আইনশাস্ত্রে ডিগ্রিধারী এবং রুয়ান্ডা গণহত্যা মামলার প্রসিকিউটর আবুবকর তাম্বাদু আদালতে বলেন, ‘আমাদের চোখের সামনেই আরেকটি গণহত্যা চলছে আর আমরা তা থামাতে কিছুই করছি না। প্রতিটি দিনের নিষ্ফ্ক্রিয়তা মানে আরও বহু লোককে হত্যা, আরও বহু নারীকে ধর্ষণ এবং আরও বহু শিশুকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা। তাদের অপরাধ কী? (অপরাধ) একটাই যে তারা ভিন্ন গোত্রের।’ খবর বিবিসি, এএফপি, আলজাজিরা ও নিউইয়র্ক টাইমসের।

৫৭ সদস্যের ওআইসির সমর্থন নিয়ে গত মাসে আইসিজেতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলা দায়ের করে পশ্চিম আফ্রিকার ক্ষুদ্র মুসলিম দেশ গাম্বিয়া। আইন অনুযায়ী এ মামলায় সাড়া দিতে বাধ্য হয় মিয়ানমার। তবে পর্যবেক্ষকদের হতাশ ও বিস্মিত করেছে মামলায় গণহত্যার পক্ষে সু চির লড়াইয়ের সিদ্ধান্তটি।

তিন দিনব্যাপী শুনানির প্রথম দিন গতকাল পিস প্যালেসের সামনে রোহিঙ্গা বিক্ষোভকারীরাও ছিলেন। তাদের ব্যানারে লেখা ছিল ‘রোহিঙ্গাদের প্রতি হ্যাঁ বলুন, বিলম্বিত বিচার মানে ন্যায়বিচারকেই অস্বীকার করা। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাদের হামলা বন্ধ করো।’

কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধি দলও হেগে গিয়েছে। দলে তিনজন রোহিঙ্গার সঙ্গে একজন দোভাষীও রয়েছেন। তাদেরই একজন রহিমা বেগম (ছদ্মনাম)। তিনি বলেন, ‘শুনানিতে আসতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। মিয়ানমার সেনারা আমাকে ধর্ষণ করেছে, আমার মতো আরও বহু নারীকে ধর্ষণ করেছে। আমাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বিচার চাই।’ বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দলও আদালতে উপস্থিত ছিল।

হেগে এ সময় সু চির পক্ষেও কিছু লোক অবস্থান নেন। এছাড়া মিয়ানমারে তার সমর্থনে সমাবেশ আয়োজন করা হচ্ছে।

গতকাল সু চি আদালতে কোনো কথা বলেননি। বিবিসির সাংবাদিক তার কাছে জানতে চান, ‘অসমর্থনযোগ্য বিষয়ের সমর্থন করতেই কি এসেছেন?’ সু চি ছিলেন নিরুত্তর। আজ আদালতে বক্তব্য দেবেন সু চি। সু চি যুক্তি দেখাবেন, এ বিষয়ে বিচার করার অধিকার আইসিজের নেই। আগামীকাল বৃহস্পতিবার উভয়পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হবে। গাম্বিয়া রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় জরুরিভিত্তিতে অন্তর্বর্তী আদেশের জন্য আবেদন জানিয়েছে। আইজিসেতে এ শুনানির বিষয়টি গতকাল আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে অত্যন্ত গুরুত্ব পায়।

আবুবকর তাম্বাদু শুনানিতে আরও বলেন, রোহিঙ্গা মুসলিমদের নির্বিচার হত্যার প্রশ্নে বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত করতেই তার দেশ আইসিজেতে এই অভিযোগ এনেছে। সারাবিশ্ব কেন এখন নীরব দর্শক? কেন আমাদের জীবদ্দশায় এটা আমরা ঘটতে দিচ্ছি? তিনি বলেন, সবাই মনে করে এখানে মিয়ানমারের বিচার হচ্ছে। আসলে এখানে বিচার চলছে আমাদের সামগ্রিক মানবিকতার। তিনি বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে দেখা করে গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছেন বলেও জানান।

শুনানিতে গাম্বিয়ার নিযুক্ত কৌঁসুলি অ্যান্ড্রু লোয়েনস্টিন রাখাইনের মংডু শহরে বেশ কয়েকটি গণখুনের বিবরণ তুলে ধরেন। আইসিজের ওয়েবসাইট থেকে লাইভ স্ট্রিম করা শুনানিতে এসব বিবরণ যখন পড়ে শোনানো হচ্ছিল, তখন সু চির মুখে কোনো অভিব্যক্তি দেখা যায়নি। কখনও সোজা সামনে তাকিয়ে, কখনও মাটির দিকে তাকিয়ে তাকে বাদীপক্ষের বক্তব্য শুনতে দেখা যায়।

আইসিজের প্রতি আবেদন জানিয়ে গাম্বিয়া বলেছে, রোহিঙ্গাদের রক্ষা করা প্রয়োজন। এখনও তারা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। প্রতিদিনই সেখানে ঝুঁকি বাড়ছে। গাম্বিয়া চায় মিয়ানমারকে গণহত্যা বন্ধ করতে বাধ্য করুক আদালত। মিয়ানমার যেন আর কখনও গণহত্যা চালাতে না পারে। আদালত হচ্ছে গণহত্যা প্রতিরোধের একমাত্র অভিভাবক। গাম্বিয়া মনে করে, রাষ্ট্রকেই গণহত্যা রোধ করতে হবে। তবে মিয়ানমার নেত্রী সু চি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধ করতে তার ক্ষমতা ব্যবহার করেননি বলেও অভিযোগ করা হয়। আদালত যদি রোহিঙ্গাদের রক্ষা না করে, তাহলে আর কেউ তা করবে না।

আদালতকে গাম্বিয়া জানায়, যেসব গ্রামে রোহিঙ্গা নেই, সেসব গ্রামে নির্যাতনেরও কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে বহু বছর ধরে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেই নির্যাতনের মাত্রা বাড়ানো হয়েছে। জাতিগতভাবে রোহিঙ্গাদের নিধন করার উদ্যোগ নিয়েছে মিয়ানমার সরকার। এসব তথ্য আছে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান মিশনে। মিশনের তথ্য প্রমাণ করছে, রোহিঙ্গাদের জোর করে বন্দিশিবিরে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের নিরাপত্তার কথা বলে সেখানে আনা হয়েছিল। কিন্তু মূল উদ্দেশ্য ছিল তাদের নিধন করা, দেশ থেকে বিতাড়িত করা। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তাদের গতিবিধির ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০১২ সাল থেকে রোহিঙ্গাদের আলাদা করে রাখা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো হয়েছে। তাদের জমিজমা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে খাদ্য সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে, যাতে তারা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়। তাদের সব ধরনের রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। মিয়ানমার কোনো স্বাধীন তদন্ত করতে দেয়নি। তাদের তদন্তগুলো ছিল ‘হোয়াইটওয়াশ’। তারা মূল ঘটনা থেকে দৃষ্টি সরানোর চেষ্টা করছে। মিয়ানমার মিথ্যাচার করছে বলেও মন্তব্য করেছে গাম্বিয়া। মিয়ানমার রাষ্ট্রীয়ভাবে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ চালিয়েছে বলেও দেশটি জানায়।

শুনানিতে জানানো হয়, রাখাইন রাজ্যের গ্রামে গ্রামে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে। নারীদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো হয়েছে। তাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। তাদের বলা হয়েছে, ‘মিয়ানমার তোদের দেশ নয়।’ হত্যার হাত থেকে যারা বেঁচে গেছে, তাদের কাছ থেকে এসব কথা জানা যায়।

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে শুনানিতে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পল এস রাইখলার বলেন, বসনিয়ার ক্ষেত্রে যতটুকু তথ্যের ভিত্তিতে আদালত অন্তর্বর্তী নির্দেশনা দিয়েছেন, মিয়ানমারের অবস্থা তার চেয়েও খারাপ।

গাম্বিয়ার পক্ষে আদালতে বক্তব্য দিতে গিয়ে ব্রিটেনের অধ্যাপক ফিলিপ স্যান্ডস বলেন, আইসিজে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেবে কিনা, প্রশ্ন সেটা নয়। প্রশ্ন হলো, কী কী সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থার নির্দেশনা দেবে?

যুক্তরাষ্ট্রের আইনজীবী তাফাদজ পাসিপান্দো বলেছেন, রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণের কথা অস্বীকার করতে সু চি বলেছেন, সেনাবাহিনী এবং বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর কেউ নোংরা বাঙালি মেয়েকে ছোঁবে না। ওরা আকর্ষণীয় নয়। এই আইনজীবী বলেন, ফেসবুকে ‘ফেক রেপ’ নামে যে পেজ খোলা হয়েছে, সেটির নিয়ন্ত্রণও হচ্ছে সু চির দপ্তর থেকে।

শুনানি শেষ আদালত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে সু চি বিক্ষোভের মুখে পড়েন। গণহত্যার জন্য ‘শেম অন ইউ সু চি’ স্লোগানরত বিক্ষোভকারীদের সামনে দিয়ে তার গাড়িবহর বেরিয়ে যায়।

আইসিজেতে ৯ বছরের মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয় বিভিন্ন দেশের ১৫ বিচারপতিকে। গাম্বিয়ার মামলায় তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন দু’জন অ্যাডহক বিচারপতি। এ দু’জন গাম্বিয়া ও মিয়ানমার মনোনীত। আদালতের সিদ্ধান্ত হবে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে।

আদালতের বর্তমান প্রেসিডেন্ট সোমালিয়ার আবদুলকাবি আহমেদ ইউসুফ এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট চীনের শুই হানকিন। আদালতের অন্য সদস্যরা হলেন- স্লোভাকিয়ার বিচারপতি পিটার টমকা, ফ্রান্সের বিচারপতি রনি আব্রাহাম, মরক্কোর বিচারপতি মোহাম্মদ বেনুনা, ব্রাজিলের অ্যান্তোনিও অগাস্তো কানশাদো ত্রিনদাদে, যুক্তরাষ্ট্রের জোয়ান ই ডনোঘুই, ইতালির গর্জিও গাজা, উগান্ডার জুলিয়া সেবুতিন্দে, ভারতের দলবীর ভান্ডারি, জ্যামাইকার প্যাট্রিক লিপটন রবিনসন, অস্ট্রেলিয়ার জেমস রিচার্ড ক্রফোর্ড, রাশিয়ার কিরিল গিভরগিয়ান, লেবাননের নওয়াফ সালাম এবং জাপানের ইউজি ইওয়াসাওয়া।

আইসিজে এ মামলা গ্রহণ করলে পূর্ণাঙ্গ রায় হতে কয়েক বছরও লেগে যেতে পারে। তবে আদালত কোনো অন্তর্বর্তী আদেশ দিলে তা মানা মিয়ানমারের জন্য বাধ্যতামূলক। বিশ্নেষকরা বলছেন, আদালত যদি মিয়ানমারে বিরুদ্ধে রায় না দেন, তবু দেশটির বিপুল আর্থিক ও রাজনৈতিক ক্ষতি হবে।

সু চিকে অপরাধ স্বীকারের আহ্বান নোবেলজয়ীদের :রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ব্যাপারে প্রকাশ্যে স্বীকার করার জন্য মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সাত নোবেলজয়ী। একই সঙ্গে এই গণহত্যার জন্য সু চি ও মিয়ানমারের সেনা কমান্ডারদের জবাবদিহির আহ্বানও জানান তারা। গতকাল এক যৌথ বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ইরানের শিরিন ইবাদি, লাইবেরিয়ার লেমাহ গবোই, ইয়েমেনের তাওয়াক্কুল কারমান, উত্তর আয়ারল্যান্ডের মাইরেড মাগুয়ের, গুয়েতেমালার রিগোবার্টা মেনচ তুম, যুক্তরাষ্ট্রের জোডি উইলিয়ামস ও ভারতের কৈলাস সত্যার্থী।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শান্তির মানুষ হিসেবে আমরা রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিয়মতান্ত্রিক বৈষম্য মোকাবিলা ও রোহিঙ্গাদের জাতীয়তা, ভূমির মালিকানা, আন্দোলনের স্বাধীনতা এবং অন্যান্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানাই। আমরা সু চিকে নৈতিক দায়িত্ব পালনের এবং তার নজরদারির অধীনে সংঘটিত গণহত্যার স্বীকৃতি ও নিন্দা জানাতে অনুরোধ করছি।’