রোহিঙ্গা ক্যাম্পে উগ্রবাদী কার্যক্রমের প্রমাণ পেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী

যমুনা নিউজ •

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প টার্গেট করে মাঠে নেমেছে উগ্রবাদি কিছু সংগঠন। এসব সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের ক্যাম্প পরিদর্শনের প্রমাণ পেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। মিয়ানমারের মতাদর্শী কোন গোষ্ঠী তাদের সহযোগিতা করছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নতুন করে শংকায় ফেলেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে।

মানবিক কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় পাওয়া রোহিঙ্গারা এখন শঙ্কার কারণ। একদিকে, তাদের ফেরত যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা, অন্যদিকে মাদকসহ নানামুখী অপরাধ। এবার সেখানে নতুন করে যুক্ত হয়েছে উগ্রবাদের বাতাস।

গেলো মাসে র‍্যাবের হাতে গ্রেফতার হয় আনসার আল ইসলামের আধ্যাত্মিক নেতা মাহমুদ হাসান গুনবি। এদেশীয় জঙ্গিবাদের অন্যতম শীর্ষ নেতাদের একজন তিনি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আরও দুই সহযোগীসহ বছরের শুরুর দিকে উখিয়ার দুইটি রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন গুনবি। চেষ্টা করেন সদস্য সংগ্রহের।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ প্রসঙ্গে বলেন, বিভিন্নভাবে ‘দাওয়াত’ এর মাধ্যমে বেশ কিছু ব্যক্তিকে ব্রেইনওয়াশ করেছে সে। সম্প্রতি তার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ক্যাম্পের বাইরে টেকনাফের পাহাড়ী এলাকায় মিয়ানমারের বিভিন্ন উগ্রবাদি সংগঠনের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন গুনবি। সেখানে ছিল, আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি, আরাকান পিপলস আর্মি, আরাকান মুজাহিদ পার্টিসহ কয়েকটি সংগঠনের নেতা। এছাড়াও সীমান্তবর্তী এলাকায় রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের নেতা একাধিক বৈঠক করেছেন বলে খবর আছে গোয়েন্দাদের কাছে।

ডিএমপি’র কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান আসাদুজ্জামান বলেন, মায়ানমার বা আরাকান ভিত্তিক যে সংগঠনগুলো বিদ্যমান তাদেরও এরকম দুই-একটা উগ্রবাদী সংগঠন আছে, যাদের উদ্দেশ্য ওই এলাকার জঙ্গী/উগ্রবাদী সংগঠনগুলোর সাথে যোগসূত্র স্থাপন করা। যাতে তারা সাংগঠনিকভাবে একে অপরকে সাহায্য করতে পারে। তবে তারা এখনও সুবিধা করে উঠতে পারেনি। তবে আটককৃত গুনবি এ উদ্দেশ্যেই সেখানে গিয়েছিলো।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে উগ্রবাদে দিক্ষিত করা ঠেকাতে সতর্ক অবস্থায় আছে প্রশাসন। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান কর্মকর্তারা।

জাতীয় নিরাপত্তা সেলের প্রধান নির্বাহী আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, আর্থিক লোভ দেখিয়ে জঙ্গী রিক্রুট করা খুবই সহজ। জঙ্গিরা সে চেষ্টাই করছে বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে। রোহিঙ্গারা যাতে উগ্রবাদের সাথে জড়িয়ে না পড়ে সেজন্য প্রয়োজনীয় নজরদারী, পাহারা ও তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম চালু আছে।

বিষয়টি নিয়ে সব সংস্থা একযোগে কাজ করছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।