১৫ যুবক সারারাত ধর্ষণ করে, দেয়নি একফোঁটা পানিও

ডেস্ক রিপোর্ট- কক্সবাজারের মহেশখালী দ্বীপে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণের ঘটনার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে চার ধর্ষক। মহেশখালীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে ধর্ষকরা ঘটনার রোমহর্ষক বিবরণ দেয়।

ধর্ষকরা বলেছে, তারা ঘটনার রাতে একে একে ১৫ যুবক তরুণীকে ধর্ষণ করে। শুধু তাই নয়, পালাক্রমে ধর্ষণের সময় ওই তরুণী একটু পানি চেয়ে বার বার আর্তনাদ করলেও তারা পানি দেয়নি। এমনকি পানির জন্য ধর্ষকদের হাতে-পায়ে ধরেন ওই তরুণী, কিন্তু পাষণ্ড ধর্ষকরা ধর্ষণ উৎসবে এতই মশগুল ছিল যে, তারা এক ফোঁটা পানিও দেয়নি বলে স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছে।

স্বীকারোক্তিতে ধর্ষকরা আরো বলেছে, ধর্ষণ-পরবর্তী ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় নারী ইউপি মেম্বার খতিজা বেগম এবং মেম্বার লিয়াকত আলী জোর চেষ্টা-তদবির করে। নারী ইউপি মেম্বার খতিজা বেগম ঘটনা ধামাচাপা দিতে ধর্ষকদের কাছ থেকে নগদ ৭৫ হাজার টাকা ও  লিয়াকত আলী মেম্বার ৩৬ হাজার টাকা নেয়। দুই ইউপি মেম্বার বর্তমানে চাঞ্চল্যকর এ মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আটক রয়েছে।

মহেশখালী থানার ওসি তদন্ত বাবুল আজাদ জানান, শনিবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিন ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে। এর আগে দুই ইউপি সদস্যসহ তিজনকে গ্রেফতার করা হয়।

এ পর্যন্ত চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় ছয়জন আসামি গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে রয়েছে। এর মধ্যে  চারজন আসামি আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আসামিরা হলো, নারী ইউপি মেম্বার খতিজা বেগম, মেম্বার লিয়াকত আলী, মনু মিয়া, ওসমান, লাইনম্যান রশিদ ও করিম। 

জবানবন্দিতে প্রত্যেকেই ওই তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করার কথা স্বীকার করেছে। ঘটনার পর ধর্ষকের সংখ্যা ১৪ জন বলে প্রচার হলেও গত রোববার প্রদত্ত জবানবন্দিতে ধর্ষকের সংখ্যা ১৫ জন বলে স্বীকার করেছে ধর্ষকরা। 

মহেশখালী থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর জানিয়েছেন, এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটনোর পর কালারমারছড়া ইউপিতে কিছু মেম্বার ও ধর্ষকরা মিলে টানা পাঁচ দিন ধরে তরুণী গণধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে রাখে। ধর্ষিতা চট্টগ্রাম শহরের এক ব্যক্তির ঘরে গৃহপরিচারিকা ছিল। তার মা থাকে মহেশখালীর মাতার বাড়িতে। মাকে দেখার জন্য চট্টগ্রাম শহর থেকে মহেশখালী দ্বীপে এসেই গত ৭ জুলাই সন্ধ্যায় চালিয়াতলী নামক এলাকায় এক দল যুবকের কবলে পড়ে সে। যুবকরা পাহাড়ের একটি ঘরের বাসিন্দাদের বের করে দিয়ে ওই তরুণীকে সারা রাত ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর তরুণীটি মহেশখালী দ্বীপের মাতারবাড়ী ইউপির মহিলা মেম্বারের ঘরে ছিলেন। গ্রেফতার হওয়া নারী মেম্বার খতিজা বেগম ও লিয়াকত আলী ধর্ষিতাকে থানায় পুলিশের কাছে না নিয়ে আপস-মীমাংসার কথা বলেন।  

এ সময় ধর্ষক-দলটি ইউপি মেম্বারদের ঘিরে ঘটনার বিষয়টি পুলিশকে না জানানোর জন্য চাপ দেয়। সে সঙ্গে ধর্ষকের দল আপস-মীমাংসার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা বলে ধর্ষিতাকে ইউপি মেম্বারের ঘর থেকে বাইরে যেতে বাধা দেয়। 

পুলিশ গত ১২ জুলাই এ ঘটনাটির কথা জানতে পেরে মাতারবাড়ীর নারী মেম্বারের ঘর থেকে ধর্ষিতা তরুণীকে উদ্ধার করে। 

থানার ওসি বলেন, আসলে ধর্ষকের দলটি ধর্ষিতার আলামত নষ্ট করার চিন্তা হয়তোবা মাথায় রেখে হুমকি-ধমকির মাধ্যমে তরুণীটিকে থানায় না আসার ব্যবস্থা করেছিলেন। ওই দিনই দুই ইউপি মেম্বারসহ ছয়জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা হয় থানায়।